প্রকাশ: ৮ মে ২০২৫, ১০:৪৪
গত বছরের আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ নেতা গা ঢাকা দেন। কেউ কেউ দেশ ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন। এতদিন দেশে অবস্থান করা দলটির প্রভাবশালী মুখ ও সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদও অবশেষে দেশ ত্যাগ করেছেন। এই ঘটনাটি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে চাঞ্চল্য তৈরি করেছে।
বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, বুধবার রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তিনি ব্যাংককের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন। তার সফর গোপন রাখা হলেও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দায়িত্বশীল একটি সূত্র নিশ্চিত করে জানিয়েছে, তিনি টিজি ৩৪০ নম্বর ফ্লাইটে দেশ ছেড়েছেন।
রাত ১১টার দিকে তিনি বিমানবন্দরে পৌঁছান। এরপর ইমিগ্রেশনে যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করে অনুমতি পান দেশ ত্যাগের। তার যাত্রার আগে কিংবা পরে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য কিংবা প্রটোকল চোখে পড়েনি।
আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে অন্তত একটি হত্যা মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর থানায় এই মামলা দায়ের হয়। মামলায় উল্লেখ রয়েছে আরও কয়েকজন শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাম। এদের মধ্যে রয়েছেন শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও ওবায়দুল কাদের।
উল্লেখযোগ্য যে, এই মামলার আগে কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলা দায়ের হলেও তাতে আবদুল হামিদের নাম ছিল না। কিন্তু নতুন করে মামলার তালিকায় তার নাম আসায় জল্পনা-কল্পনা শুরু হয় এবং এর পরপরই দেশ ছাড়লেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সময়ে আবদুল হামিদ ২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। শান্ত-সজ্জন স্বভাবের এই রাজনীতিকের হঠাৎ দেশত্যাগ অনেকের কাছে প্রশ্নবোধক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের প্রস্থান শুধু ব্যক্তি নয়, পুরো দল ও তার অতীত ভূমিকার দায়বোধকে সামনে নিয়ে আসে। আবদুল হামিদের এই যাত্রা কোথায় গিয়ে ঠেকে, তা এখন সময়ই বলে দেবে।
এই মুহূর্তে ব্যাংককে তার অবস্থান ও পরবর্তী পরিকল্পনা নিয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে অদূর ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।