সবজির দাম কমলেও কিছু পণ্যের দামে উর্ধ্বগতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
সামির আসাফ, প্রতিনিধি ( ঢাকা )
প্রকাশিত: শুক্রবার ১৭ই জানুয়ারী ২০২৫ ১১:২৬ পূর্বাহ্ন
সবজির দাম কমলেও কিছু পণ্যের দামে উর্ধ্বগতি

শীতকালীন সবজির মৌসুমে রাজধানীর বাজারগুলোতে অধিকাংশ সবজির দাম কম থাকায় ক্রেতারা কিছুটা স্বস্তি অনুভব করছেন। বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে লম্বা বেগুন, গোল বেগুন, শালগম, মূলা, টমেটোসহ বেশিরভাগ সবজি তুলনামূলকভাবে কম দামে বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে শালগম ও মূলার কেজি ২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে, যা অনেকের জন্য স্বস্তির বিষয়।  


তবে শীতকালীন মৌসুমে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছু সবজির দাম এখনো বেশি। এর মধ্যে রয়েছে বরবটি ও করলা, যেগুলো ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মটরশুঁটি প্রতি কেজি ১০০ টাকা এবং ঢেঁড়স ও পটলের দামও তুলনামূলক বেশি। বাজারে সরবরাহ কম থাকায় এসব পণ্যের দাম বাড়তি রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।  


আজ রাজধানীর মহাখালী, মগবাজার এবং মালিবাগের বাজার ঘুরে দেখা যায়, লম্বা বেগুন ৪০ টাকা, গোল বেগুন ৫০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা এবং শসা ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে শীতকালীন ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলু ৩০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা এবং গাজর ৫০ টাকা কেজি দরে ক্রেতারা কিনতে পারছেন।  


বাজারে আসা ক্রেতারা জানিয়েছেন, সবজির দাম কম থাকায় তাদের কেনাকাটায় স্বাচ্ছন্দ্য এসেছে। মহাখালী বাজারের ক্রেতা খোরশেদ আলম বলেন, “অন্য সময়ের চেয়ে এখন সবজির দাম অনেক কম। এ কারণে পরিবারের জন্য বেশি করে সবজি কিনতে পারছি। তবে মৌসুম না হওয়ায় কিছু সবজির দাম বেশি, যেগুলো কেনা একটু কষ্টকর।”  


সবজির দাম কমার পেছনে সরবরাহ বৃদ্ধিকে প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিক্রেতারা। মগবাজারের সবজি বিক্রেতা আব্দুল জব্বার বলেন, “এই সময়ে প্রচুর সবজি বাজারে এসেছে, তাই দাম কম। আগে যেখানে একজন বিক্রেতা দিনে এক মণ সবজি বিক্রি করতেন, এখন বিক্রি হচ্ছে দুই মণ পর্যন্ত। তবে শীত কমে গেলে সরবরাহ কমবে এবং দামও বাড়বে।”  


মালিবাগ বাজারের বিক্রেতা রিয়াজুল ইসলাম জানান, “২-৩ ধরনের সবজি ছাড়া প্রায় সব সবজির দাম এখন কম। করলা, বরবটি, ঢেঁড়স এবং পটলের মৌসুম না থাকায় এদের দাম বেশি যাচ্ছে। তবে শীতের সবজিগুলো সস্তায় পাওয়ায় ক্রেতারা ভালোভাবেই বাজার করছেন।”  


সবজির বাজারে এমন পরিস্থিতি আরও কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী থাকতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, সরবরাহ বাড়লে দাম আরও কমবে। তবে শীতের অবসান ও নতুন মৌসুমের সবজি না আসা পর্যন্ত ক্রেতারা বর্তমানে যে স্বস্তি পাচ্ছেন, তা দীর্ঘস্থায়ী নাও হতে পারে।  


এদিকে, ক্রেতারা বছরের অন্য সময়েও এভাবে সবজির দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, দাম কম থাকলে পুষ্টিকর খাদ্যসামগ্রী ক্রয়ের মাধ্যমে পরিবারের খাদ্যাভ্যাস উন্নত করা সম্ভব। তবে এ বিষয়ে কৃষি খাতের সঠিক পরিকল্পনা ও তদারকির প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।