
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:৫৩

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক, প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম ইনিউজ৭১-কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, অধ্যাপক মনজুরুল ইসলাম রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বিকেল ৫টার দিকে তিনি ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুতে সাহিত্য ও শিক্ষাঙ্গনে গভীর শোক নেমে এসেছে।
১৯৫১ সালে জন্মগ্রহণ করা সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। শিক্ষক হিসেবে তিনি ছিলেন কঠোর, তবুও ছাত্রদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়। তাঁর পাঠদানের ভঙ্গি ও সাহিত্য বিশ্লেষণের গভীরতা শিক্ষার্থীদের মনে বিশেষ প্রভাব ফেলেছিল।
কেবল শিক্ষাবিদ নয়, তিনি ছিলেন এক অনন্য কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক। তাঁর লেখনীতে ফুটে উঠেছে বাংলাদেশের সমাজ, সংস্কৃতি ও মানুষের অন্তর্লোক। সাহিত্য জগতে তিনি নিজস্ব এক ধারা তৈরি করেছিলেন, যা পাঠকের মনে স্থায়ী আসন পেয়েছে।
তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘অদ্ভুতুড়ে মানুষ ও অন্যান্য গল্প’, ‘দূরবীন’, ‘পরবর্তী সম্রাট’, ‘গল্পের ভেতরে গল্প’সহ বহু জনপ্রিয় বই। সাহিত্যের পাশাপাশি প্রবন্ধ ও অনুবাদ সাহিত্যে তার অবদানও বিশেষভাবে প্রশংসিত।

জীবদ্দশায় তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেন। এই পুরস্কারগুলো ছিল তাঁর সাহিত্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি।
সহকর্মী, শিক্ষার্থী ও পাঠকের কাছে তিনি ছিলেন অনুপ্রেরণার প্রতীক। তাঁর মৃত্যুতে দেশের সাহিত্যাঙ্গনে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, যা সহজে পূরণ হবে না বলে মনে করছেন সাহিত্যপ্রেমীরা।
পরিবারসূত্রে জানা গেছে, তাঁর দাফনের বিষয়টি পারিবারিকভাবে নির্ধারণ করা হবে। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত তিনি লিখে গেছেন, চিন্তা করেছেন, এবং সমাজকে দেখেছেন এক প্রজ্ঞাবান চোখে। তাঁর বিদায়ে বাংলাদেশের সাহিত্য এক মহান আলোকবর্তিকা হারালো।