প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫১
রোববার দিনগত রাত থেকে রাজধানী ঢাকায় শুরু হওয়া টানা বৃষ্টি সোমবার সকালেও অব্যাহত রয়েছে, এতে শহরের প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলিতেও পানি জমে যায় যা নাগরিক জীবনে চরম ভোগান্তি তৈরি করেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ঢাকায় ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে এবং আগামী দুই দিনের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে যা বৃষ্টিপাতের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
সকালে ফার্মগেট, ধানমন্ডি, আসাদগেট, কলাবাগান, মোহাম্মদপুর, নিউমার্কেট, মগবাজার, মিরপুর ১০ ও শেওড়াপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় হাঁটুপানি থেকে কোমরসমান পানি জমে থাকতে দেখা যায় যা সাধারণ মানুষের চলাচল কঠিন করে তোলে। বিশেষ করে আসাদগেট, মগবাজার ও মিরপুর শেওড়াপাড়ায় পরিস্থিতি ছিল আরও ভয়াবহ এবং এসব এলাকায় যানজটের কারণে দীর্ঘ সময় ভুগতে হয়েছে যাত্রীদের।
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে আজ সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঢাকার আকাশ মেঘলা থেকে মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে এবং এ সময় আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে যা নাগরিকদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করবে।
হঠাৎ এই বর্ষণে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন কর্মজীবী মানুষ। কেউ অফিসে যেতে না পেরে আটকে পড়েছেন, আবার কেউ কোমরসমান পানি পার হয়ে কর্মস্থলে পৌঁছেছেন যা মানুষের কষ্টের চিত্র স্পষ্ট করেছে।
নগরীর জলাবদ্ধতার কারণে রিকশা, বাসসহ গণপরিবহন ব্যবস্থায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটেছে। যানজট ও রাস্তার পানি একসঙ্গে তৈরি করেছে দুর্ভোগের নতুন মাত্রা। অনেক জায়গায় পানি ঢুকে গেছে দোকান ও বাসাবাড়িতেও যা সাধারণ মানুষকে আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে শহরের নালা-নর্দমার সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছাড়া এ ধরনের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়। বারবার একই সমস্যায় পড়ে নাগরিকরা হতাশা প্রকাশ করেছেন।
রাজধানীর অনেক এলাকায় শিশুরা স্কুলে যেতে পারেনি এবং সাধারণ দিনমজুর বা খেটে খাওয়া মানুষদের কাজের সুযোগ কমে গেছে। এতে জীবনযাত্রার মান আরও নিচে নেমে আসার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সবশেষে বলা যায়, হঠাৎ টানা বৃষ্টি ঢাকার অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা ও নগর পরিকল্পনার দুর্বলতা আবারও সামনে এনেছে। নাগরিকরা দ্রুত সমাধান ও কার্যকর উদ্যোগের দাবি জানিয়েছেন যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের জলাবদ্ধতার পুনরাবৃত্তি না ঘটে এবং তারা স্বস্তিতে চলাচল করতে পারেন।