প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:২৬
রাজধানীর মেট্রোরেল উদ্বোধনের পর থেকে অল্প সময়ের মধ্যেই লাখো মানুষের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বর্তমানে দিনে গড়ে সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখ যাত্রী মেট্রোরেলে চলাচল করছেন এবং বিশেষ দিনগুলোতে তা বেড়ে সাড়ে চার লাখেরও বেশি হয়। প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল দিনে পাঁচ লাখ যাত্রী পরিবহন করা হলেও আসনসংখ্যা সীমিত হওয়ায় সেটি সম্ভব হচ্ছে না।
বর্তমানে মেট্রোরেল প্রতিদিন উত্তরা-মতিঝিল-উত্তরা রুটে প্রায় ২০০টি ট্রিপ পরিচালনা করছে। যাত্রীদের বাড়তি চাহিদা মেটাতে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) নতুন করে আরও ১০টি ট্রিপ চালুর পরিকল্পনা করেছে। এতে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের সুযোগ তৈরি হবে এবং চাপ কিছুটা কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতিদিন বিপুল যাত্রীর চাপ থাকায় অনেক সময় যাত্রীদের স্থান দেওয়া সম্ভব হয় না। মন্ত্রণালয় থেকেও ট্রেন বাড়ানোর জন্য চাপ রয়েছে। যদিও ট্রেনের কোচ সংখ্যা বাড়ানো আপাতত সম্ভব নয়, তবে ট্রিপ বাড়িয়ে অন্তত আংশিক সমাধান দেওয়া যেতে পারে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতিটি সেটে ছয়টি কোচ থাকলেও ভবিষ্যতে তা আট কোচে উন্নীত করা যাবে। তবে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোরের অভাব, অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন ও বিদ্যুৎ লোডের সীমাবদ্ধতার কারণে এখনই অতিরিক্ত কোচ সংযোজন সম্ভব নয়। ফলে ডিএমটিসিএল আপাতত ট্রিপ বাড়ানোর দিকেই নজর দিচ্ছে।
নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের সময়সূচি বাড়ানো হবে। সকাল সাড়ে ছয়টা থেকে প্রথম ট্রিপ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে এবং রাত ১০টার পর পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করা হতে পারে। এতে যাত্রীরা সকাল থেকেই ট্রেন ধরতে পারবেন এবং রাতেও দেরি করে বাড়ি ফেরা সম্ভব হবে।
প্রতিদিনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকাল ছয়টা ও সাড়ে ছয়টায় ‘সুইপিং ট্রেন’ চালানো হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী দ্বিতীয় সুইপিং ট্রেন থেকেই যাত্রী পরিবহন শুরু হতে পারে। এতে শুরুতে এমআরটি পাস ও র্যাপিড পাসধারী যাত্রীরাই উঠতে পারবেন। ধীরে ধীরে সময়সূচি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা অবশ্য ট্রিপ বাড়ানোর চেয়ে কোচ বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। তাদের মতে, বেশি ট্রিপ চালাতে গেলে বিদ্যুৎ বিল ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বাড়বে। অথচ শুরু থেকেই আট কোচের পরিকল্পনা নিয়ে মেট্রোরেল নির্মাণ করা হয়েছে। এখন যেসব সমস্যা বলা হচ্ছে তা প্রকল্পের সময়ই সমাধান করা উচিত ছিল।
তারা আরও বলেছেন, মেট্রোরেলের মতো এনার্জি-হাঙরি পরিবহন ব্যবস্থায় প্রতিটি ট্রিপের খরচ অনেক বেশি। হেডওয়ে কমালে বিদ্যুৎ খরচ অর্ধেকেরও বেশি বেড়ে যায়। তাই সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে কোচ বাড়ানো এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করা জরুরি। ডিএমটিসিএল বলেছে সবকিছু ঠিক থাকলে খুব শিগগিরই নতুন ১০টি ট্রিপ যুক্ত করা সম্ভব হবে।