প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:৫০
রাজধানীর বাড্ডার নিমতলির শ্রী শ্রী মহাদেব আশ্রম ও কালী মন্দিরে ডিউটিরত পুলিশের মালামাল ও ৩০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বাড্ডা থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহার এবং এক উপপরিদর্শক, এক সহকারী উপপরিদর্শক ও পাঁচ পুলিশ কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা জানাজানি হলে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মো. তারেক মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, কর্তব্যে অবহেলার কারণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, তদন্ত শেষে দায়িত্বে অবহেলার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
ঘটনাস্থল সূত্রে জানা যায়, মন্দিরে ডিউটিরত পুলিশ সদস্যদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল মন্দির বাউন্ডারির ভেতরে নির্মাণাধীন ভবনের দোতলায়। সেখানেই সোমবার ভোর সাড়ে ৪টা থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে তারা ঘুমিয়ে থাকাকালে চারজন পুলিশের ব্যাগ, দুটি মানিব্যাগ এবং তিনটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। এর মধ্যে এক ব্যাগে রাখা ছিল ৩০ রাউন্ড গুলি।
চুরির ঘটনা জানাজানি হলে পুলিশ তৎপরতা শুরু করে এবং সকাল পৌনে ১০টার দিকে মন্দির সংলগ্ন একটি পতিত জমির পাশ থেকে ব্যাগগুলো উদ্ধার করা হয়। ভাগ্যক্রমে গুলিগুলো অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়। তবে কারা এ কাজ করেছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং মন্দিরপূজায় আগত ভক্তরা নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
পুলিশের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, এ ধরনের ঘটনায় ডিউটিরত সদস্যদের অবহেলা ছিল স্পষ্ট। কারণ দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তারা নির্ভরযোগ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হন। ফলে বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।
বাড্ডা থানার ওসি সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এসআই, এএসআই ও পাঁচ কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে গুলশান বিভাগের ডিসি নিশ্চিত করেছেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, মন্দিরে পূজা উপলক্ষে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। চুরি হওয়া গুলি উদ্ধার হওয়ায় তাৎক্ষণিক ঝুঁকি কেটে গেছে। তবে ঘটনাটি কর্তব্যে অবহেলার স্পষ্ট প্রমাণ হওয়ায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে শৃঙ্খলা রক্ষা করা হচ্ছে।