প্রকাশ: ৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ফেসবুকে ভারতবিরোধী একটি স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ) একদল নেতাকর্মী নৃশংসভাবে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটে। পরবর্তীতে রাত ৩টার দিকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মামলার অভিযোগ গঠন হয়। ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
গত ১৬ মার্চ মামলার ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে তিনজন পলাতক—মোর্শেদ-উজ-জামান, এহতেশামুল রাব্বি ও মুজতবা রাফিদ। আরেক আসামি মুনতাসির আল (জেমি) গত বছরের ৬ আগস্ট গাজীপুরের হাই সিকিউরিটি কারাগার থেকে পালিয়ে যান। এ নিয়ে মোট চারজন আসামি পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছিল রাষ্ট্রপক্ষ।
অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছে, ৭ অক্টোবর আবরার ফাহাদ দিবস এবং ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর ম্যাসাকার দিবস প্রতি বছর জাতীয়ভাবে পালিত হবে। এই দুটি দিন স্মরণীয় ও জাতীয় দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করার সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে গৃহীত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে সোমবার (৬ অক্টোবর) জানানো হয়, শহীদ আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকাসহ দেশের সব শিল্পকলা একাডেমিতে ‘You Failed to Kill Abrar Fahad’ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে। ঢাকায় প্রদর্শনীতে উপস্থিত থাকবেন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ।
এছাড়া বিকেল ৩টায় আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পলাশী চত্বরে অনুষ্ঠিত হবে স্মরণসভা। এ সময় উদ্বোধন করা হবে আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ। উদ্বোধন করবেন শহীদ আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর আবরার ফাহাদের প্রথম শাহাদতবার্ষিকীতে ছাত্র অধিকার পরিষদের উদ্যোগে প্রথমবার আট স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের আহ্বায়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন সেই উদ্যোগের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি পরে ছাত্রলীগের হামলা ও নির্যাতনের শিকার হন। স্মৃতিস্তম্ভের ফলকে লেখা ছিল, “অনন্ত মহাকালে মোর যাত্রা, অসীম মহাকাশের অন্তে”—যা আবরারের প্রিয় উক্তি ছিল এবং তার ফেসবুক প্রোফাইলেও ব্যবহৃত হয়েছিল।