প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৫, ১৭:৮
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় অমাবস্যা ও নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট অস্বাভাবিক জোয়ারে বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। প্রায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উপকূলীয় মানুষের জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। প্লাবিত হয়েছে বসতঘর, আঙিনা, রাস্তাঘাট ও মাছের ঘের। তবে দুদিন বন্ধ থাকার পর রবিবার সকাল থেকে হাতিয়ার সঙ্গে নৌযান চলাচল পুনরায় স্বাভাবিক হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, জোয়ারের তীব্র স্রোতে সুখচর ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডসহ নলচিরা, চরইস্বর ও নিঝুম দ্বীপের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব অঞ্চলে বহু মানুষ এখনো পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। তুপানিয়া, আল-আমিন গ্রাম ও নলচিরা এলাকার বেড়িবাঁধে ফাঁটল ও ভাঙনের কারণে স্রোতের পানি জনবসতিতে ঢুকে পড়ে। ফলে মাছের ঘের ও ফসলের ক্ষেত ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চরাঞ্চলের বাসিন্দারা জানান, দমারচর, ঢালচর, চরগাসিয়া, নলের চর, বয়ার চর, চর আতাউর ও মৌলভীর চর এলাকার লোকজন ঘর ছেড়ে আশ্রয় খুঁজছেন। বহু পরিবার রান্না করার মতো শুকনো জায়গা পাচ্ছে না। অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরের পাশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নিয়েছেন। বর্ষা মৌসুমে এই সমস্যাগুলি নিয়মিত হলেও এবারের জোয়ারে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
জেলা শহর মাইজদীসহ সদর, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ ও কবিরহাটের নিম্নাঞ্চলে টানা বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। ড্রেন ও খাল থেকে ময়লা আবর্জনা অপসারণ না হওয়ায় পানি নিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে গিয়ে চলাচলে অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়িতে পানি উঠে গিয়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, অমাবস্যা ও নিম্নচাপের জোয়ারে প্রায় তিন কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করেছে। তবে পুরোপুরি মেরামত না হওয়া পর্যন্ত ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন জানান, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধে কাজ শুরু হয়েছে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় হাতিয়ার সঙ্গে নৌ যোগাযোগ চালু করা সম্ভব হয়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও কিছু সময় লাগবে।