প্রকাশ: ৫ জুলাই ২০২৫, ১২:২৪
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে একই পরিবারের তিন সদস্যকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করেছে। শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ক্যাপ্টেন আদিল শাহরিয়ারের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি দল আকবপুর এলাকা থেকে মো. সবির আহমেদ ও মো. নাজিমউদ্দীন বাবুলকে আটক করে। এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে মোবাইল চুরির অভিযোগ এবং মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এলাকাবাসী খলিলুর রহমানের স্ত্রী রোকসানা বেগম রুবি, ছেলে রাসেল মিয়া এবং মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকিকে পিটিয়ে হত্যা করে। একই ঘটনায় আহত হন পরিবারের আরেক সদস্য রুমা আক্তার, যিনি বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
নিহতদের দাফন শুক্রবার রাত ৯টায় পুলিশের সহযোগিতায় কড়ইবাড়ি কবরস্থানে সম্পন্ন হয়। একই রাতে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়, যাতে ৩৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনার নৃশংসতা ও সামাজিক প্রভাব গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে এলাকায়। স্থানীয়দের দাবি, নিহত পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল এবং তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এলাকাবাসীর ক্ষোভ ও হতাশা থেকে ঘটে যাওয়া এই সহিংস প্রতিশোধ সমাজে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আটক দুজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং ঘটনার ব্যাপারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশাসনের উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে এবং অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আইনের বাইরে গিয়ে এ ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মুরাদনগরের এই হত্যাকাণ্ড দেশের সাম্প্রতিক গণপিটুনির ধারাবাহিকতায় আরও একটি ভয়াবহ উদাহরণ হয়ে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে সচেতন নাগরিক সমাজ আইন নিজ হাতে না তুলে নিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।