প্রকাশ: ৭ মে ২০২৫, ১৮:৮
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পৌরসভায় অন্তর্ভুক্তিমূলক স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নারী ফোরামের উদ্যোগে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৭ মে সকালে পৌরসভার মহসিন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সভায় পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে আলোচনা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মো. ইসলাম উদ্দিন।
ম্যাক বাংলাদেশের উদ্যোগে এবং ফানসা বাংলাদেশের সহায়তায় আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন ম্যাক বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এস এ হামিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম এবং উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সোয়েব হোসেন চৌধুরী।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ম্যাক বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী মো. আরমান খান। তিনি মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে শ্রীমঙ্গলের স্যানিটেশন চিত্র তুলে ধরেন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেন। সভায় নারী ফোরামের সদস্যসহ স্থানীয় সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে নারী ফোরামের পক্ষ থেকে শ্রীমঙ্গল পৌর প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে স্যানিটেশন খাতে মোট বাজেটের কমপক্ষে ১০ শতাংশ বরাদ্দের দাবি জানানো হয়। স্মারকলিপিতে সই করেন নারী ফোরামের সভাপতি সুচিত্রা দেব ও সেক্রেটারি সৈয়দা আরমিনা আক্তার।
নারী ফোরামের দাবি অনুযায়ী, শহরে নির্মিত ছয়টি পাবলিক টয়লেটের মধ্যে মাত্র একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক হলেও বাকি পাঁচটি নারী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য উপযোগী নয়। ফলে প্রয়োজনের সময় এসব টয়লেট ব্যবহার করা সম্ভব হয় না, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।
তারা জানান, শহরের ড্রেনের সাথে অনেক বাড়ির ল্যাট্রিন সরাসরি সংযুক্ত, যা পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ। এমনকি পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডে এখনও উন্মুক্ত মলত্যাগ দেখা যায়। পর্যটন শহর হওয়ায় শ্রীমঙ্গলে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ-ছয় হাজার পর্যটক আসেন, যাদের জন্যও শৌচাগার সংকট দুর্ভোগের সৃষ্টি করে।
নারী ফোরামের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পরিত্যক্ত টয়লেট অপসারণ, মেরামতযোগ্য টয়লেট সংস্কার এবং দরিদ্রদের জন্য ল্যাট্রিন সরবরাহ নিশ্চিত করা দরকার। এজন্য বাজেট প্রণয়নে স্যানিটেশন খাতকে আলাদা গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
সবশেষে তারা বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক স্যানিটেশন ব্যবস্থা ছাড়া নগর স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই আসন্ন বাজেটে অন্তত ১০% বরাদ্দ নিশ্চিত করে জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণের দায়িত্ব পালন করতে হবে পৌর কর্তৃপক্ষকে।