প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:৪২
গাজীপুরে চলমান অপারেশন ডেভিল হান্টের তৃতীয় দিনে পুলিশ ৮১ জনকে আটক করেছে। মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর মহানগর ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে বেশিরভাগই আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। মহানগর পুলিশ জানিয়েছে, তারা আটটি থানায় অভিযান চালিয়ে ৬৯ জনকে আটক করেছে। এদের মধ্যে টঙ্গী পূর্ব থানায় ৭ জন, টঙ্গী পশ্চিম থানায় ৮ জন, গাছা থানায় ৬ জন, বাসন থানায় ৯ জন, সদর থানায় ১৯ জন, পুবাইল থানায় ২ জন এবং অন্যান্য থানায় আরও কিছু আটক করা হয়েছে।
গাজীপুর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সোমবার রাতে জেলার পাঁচটি থানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাজীপুরে তিন দিন ধরে চলা অপারেশন ডেভিল হান্টে এখন পর্যন্ত ১৪৮ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে বেশিরভাগই স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী। তবে তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে আইনের আওতায় আনা হবে।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আলমগীর হোসেন বলেন, এই অভিযান ধারাবাহিকভাবে চলবে এবং যাতে কোনো ধরনের আইন-শৃঙ্খলার অবনতি না ঘটে, তা নিশ্চিত করা হবে। তিনি আরও বলেন, যে সমস্ত এলাকা থেকে আটককৃতরা এসেছেন, সেখানে আরও জোরালো অভিযান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা জানান, নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার এই ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে।
অপারেশন ডেভিল হান্টের প্রথম দিনেও গাজীপুরে বেশ কিছু সন্দেহজনক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছিল। দ্বিতীয় দিনেও পুলিশ অভিযান চালিয়ে অনেক লোককে গ্রেপ্তার করেছে। এই অভিযানে গাজীপুরের বিভিন্ন থানায় পুলিশের দল অভিযান চালিয়েছে এবং অভিযানগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে, গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেক বলেন, অপারেশন ডেভিল হান্টের তৃতীয় দিনে মোট ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, পুলিশের এই অভিযান চলমান থাকবে এবং শৃঙ্খলা রক্ষায় অন্য কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এছাড়া, গাজীপুরের বিভিন্ন থানা এলাকায় এই ধরনের অভিযান চলতে থাকায় সাধারণ জনগণ মাঝে কিছুটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। তবে পুলিশ তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে এবং জানাচ্ছে যে, সাধারণ মানুষ যেন কোনো ধরনের ভুল তথ্য বা গুজবে বিভ্রান্ত না হয়।
দেশের অন্যান্য এলাকাতেও এই ধরনের অভিযান চলছে এবং সারাদেশে পুলিশ বিভিন্ন ধরনের অভিযান পরিচালনা করছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযানের মূল লক্ষ্য হলো আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা করা এবং কোন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে দেয়া না। তাদের মতে, এই ধরনের অভিযান চলমান থাকলে দেশের নিরাপত্তা আরও সুদৃঢ় হবে।
এ অপারেশন চলবে, তবে পুলিশ তাদের পক্ষ থেকে সকলের সহযোগিতা কামনা করছে এবং বলছে যে, যারা এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।