প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৩
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত টেস্ট সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে কিংস্টনের সাবিনা পার্কে ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নতুন অধিনায়ক রোস্টন চেজের নেতৃত্বে তারা দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ২৭ রানে অলআউট হয়ে পড়ে, যা টেস্ট ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। স্টার্কের প্রথম ওভারেই তিন ব্যাটার সাজঘরে ফিরে গেলে শুরু হয় পতনের সুর, আর তাতে মাত্র ১৪.৩ ওভারেই শেষ হয়ে যায় ক্যারিবীয়দের ইনিংস।
এই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ২২৫ রানে অলআউট হলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ জবাবে করে মাত্র ১৪৩। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ১২১ রানে গুটিয়ে গেলে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২০৪ রান। অথচ সেই লক্ষ্য ছোঁয়ার আগেই ক্যারিবীয় ব্যাটাররা একে একে ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। এর মধ্যে সাতজন ব্যাটার শূন্য রানে আউট হন, আর প্রথম ছয়জন মিলে করেন মাত্র ছয় রান, যা টেস্ট ইতিহাসে টপ অর্ডারের সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্স।
অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক ছিলেন বিধ্বংসী, তিনি মাত্র ৯ রানে নেন ৬ উইকেট। সঙ্গে হ্যাটট্রিক করা স্কট বোল্যান্ড মাত্র ২ রানে শিকার করেন ৩ উইকেট এবং বাকিটা সামলান হ্যাজলউড। ম্যাচশেষে রোস্টন চেজ এই পারফরম্যান্সকে হৃদয়বিদারক ও বিব্রতকর বলে উল্লেখ করেন। তার দল মাত্র এক রানের ব্যবধানে সর্বনিম্ন রানের লজ্জা থেকে রক্ষা পেয়েছে, কারণ ১৯৫৫ সালে নিউজিল্যান্ড ২৬ রানে অলআউট হয়েছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
এর আগে অস্ট্রেলিয়া সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে যথাক্রমে ১৫৯ ও ১৩৩ রানে জয় পায়। যদিও তিনটি ম্যাচেই ক্যারিবীয় বোলাররা কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুললেও ব্যাটারদের বিপর্যয় সব অর্জন ম্লান করে দেয়। এমনকি সিরিজজুড়েই দলের অধিকাংশ ব্যাটার ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ ছিলেন, যার চূড়ান্ত প্রতিফলন ঘটেছে এই তৃতীয় টেস্টে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ইনিংসের মাত্র ১৪.৩ ওভার টেস্ট ইতিহাসে তৃতীয় সর্বনিম্ন ইনিংস হিসেবে রেকর্ড হয়েছে। গ্রিভস ছাড়া কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। এই পারফরম্যান্স প্রশ্ন তুলছে ক্যারিবীয় ক্রিকেটের সামগ্রিক কাঠামো ও প্রস্তুতি নিয়ে।
এই হারের মধ্য দিয়ে চেজের অধিনায়কত্বের সূচনা হলো দুঃস্বপ্নের মতো। ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ হওয়া, আর তার মধ্যে ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর—এ যেন এক তিক্ত স্মৃতি, যা ভুলে যেতে চাইবে গোটা ক্যারিবীয় দল।