প্রকাশ: ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২:১
বাংলাদেশের সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ ১ ফেব্রুয়ারি, শনিবার একটি সেমিনারে মন্তব্য করেন যে, ১৯৭০ সালের পর শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিষ্ঠিত স্বৈরতন্ত্র তার মেয়ে শেখ হাসিনার মাধ্যমে আবার ফিরে এসেছে। সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড গুড গভর্নেন্স আয়োজিত এই সেমিনারে তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে তৈরি হওয়া সংবিধানের মাধ্যমে দেশে একটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্বৈরতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়েছিল।
অধ্যাপক রীয়াজ উল্লেখ করেন, ওই সময়ে একাধিক সাংবিধানিক সংশোধনী আনার পরও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর হাতে ন্যস্ত করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রীকে ব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষমতার অধিকারী করে তোলা হয়। তার মতে, এই পরিবর্তনগুলি দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় এক নতুন প্রকারের স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে।
তিনি আরও বলেন, এক ব্যক্তির শাসন ব্যবস্থার অবসান ঘটানো ছাড়াও গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে কাঠামোগত পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করতে হবে। রীয়াজ জানান, দেশের পরিবর্তন ও উন্নতির জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
আলী রীয়াজের মতে, গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ স্পষ্ট হয়েছে এবং এটি দেশের উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। তিনি বলেন, এটাই বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সঠিক পথ।
তিনি আরো বলেন, যদিও দেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের জন্য গণ-অভ্যুত্থানের পর একাধিক সুযোগ তৈরি হয়েছে, তবুও এটি কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা দেশের সকল রাজনৈতিক দলের উপর নির্ভর করছে। তিনি রাজনীতি, জনগণের আকাঙ্ক্ষা এবং সরকারের মধ্যে সমন্বয় করার উপর গুরুত্ব দেন।
অধ্যাপক রীয়াজ জানান, রাজনৈতিক দলগুলো যদি একত্রিত হতে পারে, তবে তারা দেশের কাঠামোগত পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের জন্য ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস এবং সমষ্টিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।
এদিকে, তিনি দেশে সাংবিধানিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন এবং বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়া যদি সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়, তবে তা দেশের ভবিষ্যত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
অবশেষে, আলী রীয়াজ বলেন, দেশের উন্নতির জন্য সকল রাজনৈতিক দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন, যা দেশকে গণতন্ত্রের পথের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।