প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৫, ১২:২৫
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় এক ব্যতিক্রমধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোশারফ হোসাইন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়নে তিনি সরেজমিনে বিভিন্ন বিদ্যালয় ঘুরে দেখছেন। এই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি তিনি পরিদর্শন করেন এক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির একটি শ্রেণিকক্ষ, যেখানে চলছিল বাংলা বিষয়ে পাঠদান।
প্রবেশ করেই তিনি লক্ষ্য করেন শিক্ষকের পাঠদানে মনোযোগী শিক্ষার্থীরা প্রমথ চৌধুরীর ‘বইপড়া’ প্রবন্ধ নিয়ে আলোচনা করছে। তিনি নিজেও আলোচনায় যুক্ত হন এবং শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরেন প্রমথ চৌধুরীর প্রাঞ্জল গদ্যশৈলী, বইয়ের প্রতি ভালোবাসা ও পাঠাভ্যাসের গুরুত্ব। এতে করে শিক্ষার্থীদের মাঝে কৌতূহল এবং আগ্রহের দীপ্তি স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে।
এই অভিজ্ঞতা ইউএনওকে স্মরণ করিয়ে দেয় তাঁর নিজের ছাত্রজীবনের কথা। তিনি বলেন, এমন মুহূর্তগুলো তাঁকে যেন আবার সেই কৈশোরে ফিরিয়ে নিয়ে যায়, যেখানে পাঠ্যবইয়ের পাতায় লুকিয়ে থাকত স্বপ্ন আর অনুপ্রেরণা।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন তাঁর কাছে শুধু প্রশাসনিক দায়িত্ব নয় বরং এক একটি জীবনের অংশ হয়ে ওঠে, যেখানে তিনি নিজেও শিখেন নতুন কিছু, উপলব্ধি করেন শিক্ষার্থীদের মনোজগৎ।
তিনি বলেন, আমাদের এই প্রজন্ম যেন বই পড়ার আনন্দে উদ্বুদ্ধ হয়, জ্ঞানের আলোয় নিজেদের আলোকিত করে, সেটাই তাঁর চাওয়া।
এ প্রসঙ্গে তিনি স্মরণ করেন জর্জ আর আর মার্টিনের উক্তি, “একজন পাঠক মৃত্যুর আগে হাজারটা জীবন যাপন করে। যে পড়ে না, সে কেবল একটি জীবনই বাঁচে।”
ইউএনও মো. মোশারফ হোসাইন স্বপ্ন দেখেন, চাকরি শেষে শ্রেণিকক্ষেই আবার ফিরে যাবেন শিক্ষক কিংবা শিক্ষার্থী হিসেবে—পাঠাভ্যাসের এই পথচলাকে তিনি মানেন জীবনের অপরিহার্য এক অংশ হিসেবে।
তাঁর এই উদ্যোগ ও দৃষ্টিভঙ্গি নিঃসন্দেহে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি দিকনির্দেশনা ও অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।