প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৪
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ইতিহাসের কুখ্যাত স্বৈরশাসক অ্যাডলফ হিটলারকেও ছাড়িয়ে যাওয়া এক যুদ্ধবাজ শাসক হিসেবে অভিহিত করেছেন। তার ভাষায়, গাজায় ২০ মাসে ৫৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এই গণহত্যার জন্য তিনি সরাসরি নেতানিয়াহুকে দায়ী করেন।
মঙ্গলবার ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা শিল্প মেলা (আইডিইএফ) ২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে এসব মন্তব্য করেন এরদোগান। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরাইলের গণহত্যা নিয়ে যারা নীরব, তারাও এই অপরাধে পরোক্ষভাবে জড়িত। এমনকি আন্তর্জাতিক মহলের অনেক শক্তিধর দেশ এই নীরবতা বজায় রেখে মানবতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এরদোগান জানান, আজকের তুরস্ক শুধু প্রতিরক্ষা শিল্পেই নয়, বরং প্রযুক্তিতে স্বনির্ভর একটি জাতি হিসেবে বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলেন, তুরস্ক আজ নিজের সক্ষমতার ওপর দাঁড়িয়ে, নিজেদের তৈরি প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আইডিইএফ মেলা সেই সক্ষমতার প্রতিফলন।
তুর্কি প্রেসিডেন্টের মতে, গণহত্যার বিরুদ্ধে কথা না বলার অর্থই হচ্ছে সেই অপরাধে নীরব অংশীদার হওয়া। তিনি বলেন, গাজায় যা চলছে তা শুধু একটি যুদ্ধ নয়, বরং একটি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার পরিকল্পনা। এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা প্রতিটি বিবেকবান মানুষের দায়িত্ব।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, অতীতে সাইপ্রাস সংকট ও সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে তুরস্ক বহুবার তথাকথিত মিত্রদের সাহায্য না পেয়ে একাকী লড়েছে। এমনকি ১৯৭৪ সালে সাইপ্রাসে অভিযান চালানোর পর তাদের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
এরদোগান বলেন, এক সময় যুদ্ধবিমান মেরামতের জন্য বিদেশে পাঠানো হতো, অথচ সেগুলো আটকে রাখা হতো। মৌলিক যোগাযোগ যন্ত্রও সরবরাহ করা হতো না। এসব অবিচার সত্ত্বেও তুরস্ক আজ একটি পরিপূর্ণ প্রতিরক্ষা শক্তিতে পরিণত হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, সিরিয়ার পরিস্থিতিতেও পশ্চিমা বিশ্ব তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। বরং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে তুরস্ক বারবার ব্যর্থ হয়েছে কারণ তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শেষে তিনি বলেন, আজ তুরস্ক নিজের আকাশে নিজের তৈরি ডানায় ভর করে উড়ে চলেছে। এটি একটি স্বাধীন জাতির প্রতিরক্ষা খাত নয়, বরং সার্বভৌমত্ব ও আত্মনির্ভরতার প্রতীক।