বড়াইগ্রামে মাছ চুরির মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক
সুজন কুমার শীল জেলা প্রতিনিধি, নাটোর
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৭ই জানুয়ারী ২০২৫ ১২:১১ অপরাহ্ন
বড়াইগ্রামে মাছ চুরির মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান কারাগারে

নাটোরের বড়াইগ্রামে মাছ চুরির মামলায় জোনাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার তিনি বড়াইগ্রাম আমলি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুর রহমান সুমন জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।  


বাদীপক্ষের আইনজীবী মখলেছুর রহমান মিলন জানান, ২০২১ সালে বোর্ণী গ্রামের বিএনপি কর্মী আব্দুর রহিম প্রতিবেশী আব্দুল আউয়ালের একটি পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। পরের বছর ২০২২ সালের ১৫ই এপ্রিল ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের একটি দল পুকুরের মাছ লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ ওঠে।  


ঘটনার পর জুলাই মাসে ভুক্তভোগী আব্দুর রহিম বড়াইগ্রাম থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে প্রধান আসামি করে আরও ৯ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। পরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করে দুজনকে বাদ দিয়ে সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।  


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আব্দুর রহিম দীর্ঘদিন ধরে পুকুরটিতে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন। মাছ লুটের ঘটনার পর তিনি আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয় এবং বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে।  


ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আদালতে আত্মসমর্পণের সময় তিনি দাবি করেন, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি মামলা। তবে আদালত তার যুক্তি গ্রহণ না করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।  


এ ঘটনায় বড়াইগ্রাম এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই ধরনের ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে ঘটে আসছে। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।  


আইনজীবী মখলেছুর রহমান বলেন, “মামলাটির তদন্তে পিবিআই যে চার্জশিট দিয়েছে, তাতে পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে ইউপি চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীরা মাছ লুটের ঘটনায় জড়িত ছিলেন। আমরা আশা করি আদালত সঠিক রায় প্রদান করবেন।”  


এদিকে, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার একটি উদাহরণ।  


বড়াইগ্রাম থানার ওসি জানান, মামলার তদন্ত ও প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি দ্রুতই অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি জানান।