ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে মারধরের পর নিহত হয়েছেন তোফাজ্জল (৩০)। নিহত তোফাজ্জল মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং সম্প্রতি পরিবারবিহীন হয়ে রাস্তায় ঘুরতেন।
তোফাজ্জল বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঠালতলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। তার সম্পর্কে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামান আল ইমরান ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে জানান, প্রেমের কারণে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে কিছুদিনের মধ্যে তার মা, বাবা এবং একমাত্র বড় ভাইও মারা যান, যার ফলে পরিবারবিহীন হয়ে পড়েন।
ইমরান তার স্ট্যাটাসে লিখেন, "তোফাজ্জল বেশ স্বজ্জন, পরোপকারী এবং নেতৃত্বগুণ সম্পন্ন ছাত্রনেতা ছিল। কিন্তু মানসিক ভারসাম্য হারানোর পর গত ৩-৪ বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াত।" তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, সম্ভবত তোফাজ্জল খাবারের সন্ধানে ফজলুল হক হলে গিয়েছিলেন, যেখানে তাকে আটক করা হয়।
ইমরান তার এক বন্ধুকে ফোন করে তোফাজ্জলের মানসিক অবস্থার কথা জানান এবং তাকে সাহায্য করতে বলেন। কিন্তু দুই ঘণ্টার মধ্যে তিনি জানতে পারেন যে, তোফাজ্জল এফএইচ হলের শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছেন।
এ ঘটনায় ইমরান আফসোস প্রকাশ করে লিখেছেন, "আজকে একটি নিরপরাধ প্রাণ চলে গেল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলংকিত হলো।" তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি নিহতের হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে আইনি প্রক্রিয়ায় লড়বেন।
এ ঘটনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজে নিন্দার ঝড় উঠেছে। শিক্ষার্থীরা বিচার দাবি করেছেন এবং অনতিবিলম্বে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা, যারা এই ঘটনার মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতির নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় নিয়ে আলোচনা করছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।