যাত্রীদের জিম্মি করে আন্দোলন দুঃখজনক: রেল উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৮শে জানুয়ারী ২০২৫ ১১:১৪ পূর্বাহ্ন
যাত্রীদের জিম্মি করে আন্দোলন দুঃখজনক: রেল উপদেষ্টা

রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন পরিদর্শনকালে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ট্রেন বন্ধ রেখে যাত্রীদের জিম্মি করে আন্দোলনের ঘটনাকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেছেন। মঙ্গলবার সকালে রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দাবি থাকতে পারে, কিন্তু এভাবে যাত্রীদের কষ্ট দিয়ে আন্দোলন করা উচিত নয়। তিনি আন্দোলনকারীদের আহ্বান জানান দ্রুত কর্মবিরতি প্রত্যাহার করার।  


রেল উপদেষ্টা জানান, রানিং স্টাফদের দাবি পূরণের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তিনি বলেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে এ বিষয়ে সমাধান দেওয়া সম্ভব নয়, কারণ মূল দায়িত্ব অর্থ মন্ত্রণালয়ের। দাবি পূরণে সমাধানের পথ খোঁজা হচ্ছে এবং আশা করা হচ্ছে দ্রুত এ সমস্যার মীমাংসা হবে।  


সোমবার মধ্যরাত থেকে কর্মবিরতিতে যান রেলের রানিং স্টাফরা। তাদের প্রধান দাবি হলো, মূল বেতনের সঙ্গে রানিং ভাতা যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা প্রদান। রেল কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি সমাধানে চেষ্টা চালালেও শেষ পর্যন্ত সমঝোতা করা সম্ভব হয়নি। ফলে রাত থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।  


এই কর্মবিরতির ফলে সকালেই স্টেশনে এসে ভোগান্তিতে পড়েন হাজার হাজার যাত্রী। অনেকেই পূর্ব থেকে জানতেন না যে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। স্টেশনে এসে তারা টিকিট বাতিল বা বিকল্প পরিবহনের ব্যবস্থা করতে বাধ্য হন, যা তাদের জন্য সময়সাপেক্ষ এবং কষ্টদায়ক হয়ে ওঠে।  


উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান উল্লেখ করেন, এ ধরনের কর্মবিরতি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ায়। তিনি বলেন, কর্মবিরতি দিয়ে যাত্রীদের কষ্ট দেওয়ার পরিবর্তে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত। জনগণের সেবায় রেল বিভাগের কর্মীদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন।  


রানিং স্টাফদের দাবির বিষয়ে তিনি আরও জানান, রেলের কর্মীদের সুরক্ষা ও সুবিধা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। তবে তা করতে হলে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। তিনি আশাবাদী যে, আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে এবং রেল চলাচল স্বাভাবিক হবে।  


যাত্রীদের অনেকেই এই কর্মবিরতিকে অনৈতিক বলে অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, রেল শ্রমিকদের নিজেদের দাবির জন্য কর্মবিরতি দেওয়া যেতে পারে, তবে তা সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি করে হওয়া উচিত নয়। রেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবা বন্ধ হওয়ায় হাজারো যাত্রী সকাল থেকেই চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন।  


রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি রেলের সেবার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। যাত্রীসেবা স্বাভাবিক করতে এবং শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। একই সঙ্গে যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে সব পক্ষকে দ্রুত উদ্যোগী হওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলা হয়েছে।