পুলিশ সংস্কার কমিশন পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া থেকে রাজনৈতিক পরিচয় তুলে দেওয়ার সুপারিশ করেছে বলে জানিয়েছেন কমিশনপ্রধান সফর রাজ হোসেন। সোমবার (১৮ নভেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অফিসে পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রথম সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান তিনি।
কমিশনপ্রধান সফর রাজ হোসেন বলেন, "১৯২৮ সাল থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া চলছে। ব্রিটিশদের সময় থেকে এই প্রক্রিয়া অনুসৃত হচ্ছে এবং এতে চাকরিপ্রার্থীদের রাজনৈতিক পরিচয়, বিশেষ করে তাদের আত্মীয়-স্বজনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বিবেচনায় নেওয়া হয়। এই প্রথা বেশ কিছু ক্ষেত্রে চাকরি প্রার্থীদের অবিচারের মুখে ফেলছে, বিশেষত যখন কারো আত্মীয়-স্বজন রাষ্ট্রবিরোধী নয়, কিন্তু তারা সরকারি দলের সমর্থক নন।"
তিনি আরও বলেন, "অনেক সময় দেখা গেছে, চাকরি প্রার্থীদের আত্মীয়-স্বজনের রাজনীতির প্রতি সমর্থন থাকলেও তাদের চাকরি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। কমিশন এই পুরনো প্রথাকে অবিলম্বে বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে, যাতে রাজনৈতিক পরিচয় বা পূর্বসূরি রাজনীতি চাকরিতে বাধা না হয়।"
কমিশনপ্রধান জানান, পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি নিশ্চিত করে যে চাকরি প্রার্থীরা অপরাধী নয় এবং তারা সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, "ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক পরিচয় কোনোভাবেই বিবেচনায় নেওয়া উচিত নয়।"
পুলিশ সংস্কার কমিশনের কাজ শুরু হয় অক্টোবর মাসের ৬ তারিখ থেকে। সফর রাজ হোসেন জানান, কমিশন তাদের সুপারিশগুলির একটি খসড়া প্রস্তুত করেছে এবং চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, কিছু সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলেও, কিছু প্রস্তাবের বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় লাগবে।
কমিশন আরও জানিয়েছে, তারা সরকারী, আধা-সরকারী এবং ব্যাংক চাকরিতে ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করছে, যার ফলে চাকরি প্রার্থীদের জন্য প্রক্রিয়াটি সহজ হবে এবং একইসঙ্গে কার্যকরীও থাকবে।
এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হলে, পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ হবে, যা চাকরিপ্রার্থীদের জন্য একটি বড় উপকারে আসবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।