কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে শ্রী কৃষ্ণ ভক্তদের ঢল

নিজস্ব প্রতিবেদক
আনোয়ার হোসেন আনু, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শুক্রবার ১৫ই নভেম্বর ২০২৪ ০৪:০৮ অপরাহ্ন
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে শ্রী কৃষ্ণ ভক্তদের ঢল

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় গতকাল থেকে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শতাব্দীপ্রাচীন রাস উৎসব, যা প্রতি বছর পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয়। উৎসবে যোগ দিতে সারা দেশ থেকে হাজার হাজার তীর্থযাত্রী কুয়াকাটায় এসে পৌঁছেছেন। বিশেষত, কুয়াকাটার শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও এর আশপাশ এলাকা এখন পূর্ণ হয়ে উঠেছে ভক্তদের ভিড়ে।


সকাল ৫টা ৪৩ মিনিট থেকে শুরু হওয়া পূর্ণিমা তিথি ১৬ নভেম্বর সকাল ৩টা ৩২ মিনিট পর্যন্ত থাকবে, এ সময়ের মধ্যে ভক্তরা সমুদ্রস্নান, পাপমোচন ও পূণ্যলাভের উদ্দেশ্যে কুয়াকাটার সমুদ্র সৈকতে এসে স্নান করবেন। কুয়াকাটা রাস পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কাজল বরন দাস জানান, "এ বছরও পূর্ণিমা তিথিতে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পদচারণায় মুখরিত হচ্ছে।"


কুয়াকাটা রাস উৎসবের মূল আয়োজনে অংশগ্রহণ করতে আসা ধর্মপ্রাণ ভক্তরা সকাল থেকে শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও তার আশপাশে আসন পেতে বসছেন। এ সময় মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হচ্ছে নাম কীর্তন, ভাগবৎ পাঠ ও শ্রীকৃষ্ণের লীলা কীর্তন। ভারতের কবিতা ঘোষও এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছেন।


এদিকে, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে সকাল থেকে শুরু হওয়া পূণ্যস্নানে যোগ দিতে আসছেন বিভিন্ন স্থান থেকে নারী-পুরুষেরা। অনেকেই নিজের মানত পূর্ণ করতে পুরোহিতদের মাধ্যমে নানা রকম পূজা-অর্চনা করছেন। রাস পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পুরোহিত ইঞ্জিনিয়ার নিহার রঞ্জন মণ্ডল জানান, "আজ সন্ধ্যায় পূজার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে, তারপর রাতভর চলবে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান।"


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে কুয়াকাটায় তিন লক্ষাধিক তীর্থযাত্রীর সমাগমের সম্ভাবনা রয়েছে। নিরাপত্তার ব্যবস্থা সুনির্দিষ্ট করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে একটি নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি, থানার পুলিশ, সেনাবাহিনী, টুরিস্ট পুলিশ ও গ্রাম পুলিশসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে রয়েছে।


কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার মো. হাবীবুর রহমান বলেন, "গতকাল থেকে পুরো কুয়াকাটা শহর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। কোনো দুষ্কৃতকারী যেন কোনো ধরনের অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, সে ব্যাপারে আমরা সজাগ আছি।"


উল্লেখ্য, রাস পূর্ণিমা কুয়াকাটায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান, যা সারা বছর ধরে তাদের জন্য অপেক্ষার মুহূর্ত হয়ে থাকে।