শ্রীমঙ্গলে আগাম জাতের ধান কাটা ও মাড়াই শুরু, কৃষকদের মুখে হাসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
এহসান বিন মুজাহির জেলা প্রতিনিধি , মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: সোমবার ১৮ই নভেম্বর ২০২৪ ১০:৫০ পূর্বাহ্ন
শ্রীমঙ্গলে আগাম জাতের ধান কাটা ও মাড়াই শুরু, কৃষকদের মুখে হাসি

শ্রীমঙ্গল উপজেলার ফসলি মাঠে সোনালি শীষে ভরে গেছে আগাম জাতের রোপা আমন ধান। ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়ে গেছে, আর এ কাজের মধ্যে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় কৃষকরা। শ্রীমঙ্গল, সিন্দুরখান এবং আশিদ্রোন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ধানের ক্ষেতগুলো সোনালি রঙে রাঙিয়ে উঠেছে। কৃষকদের মুখে বিরাজ করছে আনন্দের হাসি, আর শ্রমজীবী মানুষরা ধান কাটতে এবং মাড়াই করতে দিন-রাত এক করছেন।


স্থানীয় কৃষকরা জানাচ্ছেন, এবারের মৌসুমে রোপা আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। বাংলা কার্তিক মাসের শেষে ধান পাকে, আর অগ্রহায়ণের শুরুতেই ধান কাটা এবং মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়। সিন্দুরখান ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের কৃষক আব্দুল বাছিত জানান, তিনি প্রতি বছর নিজস্ব দুই বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করেন। তিনি বলেন, পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমন ছিল না এবং অতিরিক্ত ঝড়-বৃষ্টির প্রভাবও পড়েনি, ফলে বাম্পার ফলন হয়েছে। তিনি তার জমি থেকে প্রায় ৩০ মণ ধান ঘরে তুলেছেন। বর্তমানে কাঁচা ধান প্রতি মণ ১ হাজার টাকা এবং শুকনো ধান প্রতি মণ ১ হাজার ৩শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।


তবে আশিদ্রোন ইউনিয়নের বিলাসের পাড় গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ জানান, গত বছর তিনি স্বর্ণধান চাষ করতে গিয়ে নদীর পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে কিছু ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন। তবে এবারে ভালো আবহাওয়া এবং সঠিক পরিচর্যার ফলে প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন।


শ্রীমঙ্গলের কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে অতিবৃষ্টি ও বন্যায় প্রায় দেড়শ হেক্টর জমির ধান ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তবে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা ও সরকারি প্রণোদনার মাধ্যমে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মহিউদ্দিন বলেন, "বন্যার পর সরকারি সহায়তা ও সার্বিক সমন্বয়ের মাধ্যমে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হবো।"


সামগ্রিকভাবে, শ্রীমঙ্গলে ধানের বাম্পার ফলন এবং সফল মাড়াইয়ের মধ্য দিয়ে কৃষকরা তাঁদের স্বপ্নপূরণের পথে এক ধাপ এগিয়ে গেছেন। যদিও অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে কিছু ক্ষতি হলেও, কৃষকদের আস্থা এবং ফলন দেখে আশা করা হচ্ছে, স্থানীয় কৃষি উৎপাদন যথাসময়ে ঘরে তুলতে সক্ষম হবে।