প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ৯:৩৭
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের কল্যাণের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন। সূরা আল-বাকারা’র ১৪৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, “সুতরাং তোমরা কল্যাণের দিকে প্রতিযোগিতা করো।” এই আয়াতটি মুসলমানদের মনে করিয়ে দেয়, শুধু ভালো কাজ করলেই চলবে না, বরং সেই ভালো কাজে অগ্রগামী হওয়ার মনোভাব থাকতে হবে।
আধুনিক যুগের ব্যস্ত জীবনে অনেকেই ইবাদত বা নেক আমলের সময় পান না বলে অভিযোগ করেন। অথচ ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজগুলোও ইবাদতের মর্যাদা পায় যদি তা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করা হয়। যেমন পরিবারের খরচ চালানো, অসহায়কে সাহায্য করা বা প্রতিবেশীর খোঁজ নেওয়াও নেক আমল হিসেবে গণ্য হয়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তোমরা জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাও, তা যদি অর্ধেক খেজুর দান করেও হয়।” এই হাদীসটি বোঝায়, নেক কাজের জন্য বড় সুযোগের অপেক্ষায় না থেকে ছোট ছোট কাজেও এগিয়ে আসা উচিত। কারণ আল্লাহর কাছে প্রতিটি ভালো কাজই মূল্যবান।
বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ব্যস্ত পেশাগত জীবন এবং নানা দায়িত্বের কারণে অনেকেই ভালো কাজ করার সুযোগ হারিয়ে ফেলেন। অথচ একটি দোয়া শেখানো, কোরআনের একটি আয়াত শোনানো বা কাউকে ভালো কথা বলা— এগুলোই সওয়াবের কাজ। এমনকি মুখে হাসি রেখেও কারও সঙ্গে ভালো ব্যবহার করাও ইসলামে নেক আমল বলে গণ্য।
নবী করীম (সা.) প্রতিদিনের জীবনে ছোট ছোট ভালো কাজকে গুরুত্ব দিতেন। তিনি নিজ হাতে গরিবদের খেতে দিতেন, অসুস্থ সাহাবিদের দেখতে যেতেন এবং সব সময় মানুষকে ক্ষমার শিক্ষা দিতেন। তার জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল নেক আমলের প্রতিযোগিতায় ভরা।
কুরআন ও হাদীস থেকে বারবার এই শিক্ষা পাওয়া যায় যে, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করতে হলে বড় কিছু করতে হবে এমন নয়। বরং আন্তরিকতার সঙ্গে করা ছোট কাজই আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় হতে পারে। এই দৃষ্টিভঙ্গিই একজন মুসলিমকে পরিপূর্ণ মু’মিনে পরিণত করে।
ইসলাম নেক আমলের এক বিস্তৃত দিগন্ত উন্মুক্ত করেছে যেখানে প্রতিটি ভালো আচরণ, সদ্ব্যবহার, ন্যায়বিচার এবং মানুষের পাশে দাঁড়ানো— কিছুই ইবাদত। তাই মুসলমানদের উচিত প্রতিদিন অন্তত একটি করে ভালো কাজ করার সংকল্প নেওয়া।
এই প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং পরকালের সফলতা নিশ্চিত করা। যারা এই দুনিয়ায় নেক আমলের প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকবে, তারাই হবে আল্লাহর নিকটবর্তী এবং চিরস্থায়ী জান্নাতের অধিবাসী।