প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২৫, ৯:৩২
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ প্রাণ হারাল ছোট্ট শিশু নাফি, যার বয়স ছিল মাত্র ৯ বছর। ভাই নাফির মৃত্যুতে এর আগেই নিহত বোন নাজিয়ার সঙ্গে একসাথে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালো দুই সহোদর।
নাফি প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল এবং তার বোন নাজিয়া ছিল তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। দুই ভাই-বোন উত্তরার কামারপাড়া এলাকায় তাদের বাবা-মায়ের সঙ্গে বসবাস করতো। হৃদয়বিদারক এই ঘটনায় পুরো এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে মারা যায় নাফি। চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরের ৯৫ শতাংশ ছিল দগ্ধ। এর আগে একই আইসিইউতে দগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে তার বোন নাজিয়া, যার শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এই দুর্ঘটনায় তাদের হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আরও এক শিক্ষার্থী মারা গেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে।
ঘটনাটি ঘটে সোমবার দুপুরে যখন মাইলস্টোন স্কুল সংলগ্ন এলাকায় বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভেঙে পড়ে। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের স্থাপনায়, যার ধাক্কায় শিক্ষার্থীদের একাংশ মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়।
মঙ্গলবার রাতে আইসিইউতে মৃত্যু হয় মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষিকা মাসুকা এবং একই রাতে ৯ বছর বয়সী শিশু বাপ্পিও মারা যায়, যার শরীরের ৩৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।
মধ্যরাতে আরও চার শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়, যাদের মধ্যে এরিকসনের শরীর ১০০ শতাংশ, আরিয়ানের ৮৫ শতাংশ, নাজিয়ার ৯০ শতাংশ এবং সায়ান ইউসুফের শরীরের ৯৫ শতাংশ দগ্ধ হয়।
এর আগেই মারা গেছেন অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ, সপ্তম শ্রেণির আফনান ফাইয়াজ, প্রাইমারি সেকশনের হেড কো-অর্ডিনেটর মাহেরীন চৌধুরী ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ সামিন। এই ঘটনায় শিক্ষাঙ্গনসহ সারা দেশে শোকের ছায়া বিরাজ করছে।