সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বিরুদ্ধে ১৪৬ কোটি ১৯ লাখ ৭০ হাজার ৯৬ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ২৯টি ব্যাংক হিসাবে ৬৬৫ কোটি টাকার লেনদেনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসাধু উপায়ে এই সম্পদ অর্জন করেছেন।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, আনিসুল হকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয় গত বছরের ৭ অক্টোবর। তার সহযোগী অ্যাডভোকেট তৌফিকা করিমসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধান চলছে। গত ১৩ আগস্ট ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে গ্রেফতারের পর তাকে কয়েকটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
আনিসুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে টানা তিনবার নির্বাচিত হন এবং ২০১৪ সাল থেকে আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তবে সরকার পরিবর্তনের পর তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
মামলার বিবরণে বলা হয়, আনিসুল হক ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সন্দেহজনকভাবে ৩৪৯ কোটি ১৫ লাখ ২১ হাজার ৫৮২ টাকা জমা এবং ৩১৬ কোটি ৪৮ লাখ ৮১ হাজার ৬০৮ টাকা উত্তোলন করেছেন। এ অর্থের উৎস সম্পর্কে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে না পারায় এই মামলা করা হয়েছে।
মামলায় আরও বলা হয়, আসামি দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ মানিলন্ডারিংয়ের উদ্দেশ্যে রূপান্তর, স্থানান্তর এবং হস্তান্তর করেছেন। এটি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আনিসুল হকের বিরুদ্ধে আরও কিছু মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলাটি উল্লেখযোগ্য। এসব মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান থাকায় আনিসুল হক কারাগারে রয়েছেন।
দুদকের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।