প্রকাশ: ৯ মে ২০২৫, ১৬:৫৫
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে রাজধানী ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনের রাজপথে শুরু হয় বিক্ষোভ সমাবেশ। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্যোগে এই কর্মসূচিতে সকাল থেকেই জনতার ঢল নামে। সমাবেশের ঘোষক হিসেবে ছিলেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, যিনি নিজ বাসভবন থেকে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এই কর্মসূচির আহ্বান জানান।
সমাবেশে অংশ নিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল সহকারে ছাত্র, যুব ও নাগরিক শ্রেণির মানুষ জড়ো হতে থাকে। তাঁদের হাতে ব্যানার, মুখে স্লোগান—আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আহ্বানে প্রকম্পিত হয় রাজপথ। তারা আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাস ও গণহত্যার অভিযোগে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। আন্দোলনকারীরা জানান, দেশের গণতন্ত্র বারবার আওয়ামী লীগের হাতে অপহৃত হয়েছে, এখন সময় এসেছে তাদের রাজনৈতিকভাবে অবসান ঘটানোর।
বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই সেখানে অবস্থান শুরু করে বিক্ষোভকারীরা। শুক্রবার জুমার নামাজের পর মিন্টুরোডের পানির ফোয়ারা এলাকায় বিশাল জমায়েতে রূপ নেয় সমাবেশ। রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সবাই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে একমত পোষণ করেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে অবস্থান নেয় এবং সতর্ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে। যমুনার সামনে ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয় যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়। তবে এ পর্যন্ত বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
সমাবেশে উপস্থিত এক তরুণ বলেন, আওয়ামী লীগ বারবার নির্বাচনী জালিয়াতি করেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যা চালিয়েছে, জনগণের মতের তোয়াক্কা করেনি। তিনি প্রশ্ন রাখেন, এদের যদি নিষিদ্ধ না করা হয় তবে কারা হবে? আরেকজন প্রবীণ নাগরিক জানান, গণতন্ত্র রক্ষার জন্য সকল দল ও জনগণের উচিত আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক পরিসর থেকে বাদ দেওয়া।
আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে এনসিপি ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো আগামী সপ্তাহে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। তাদের দাবি, এই আন্দোলন চলবে যতদিন না আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্য অনুযায়ী, তারা শান্তিপূর্ণ উপায়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য আওয়ামী লীগের মতো দলগুলোর বিদায় চায়। তাঁদের দাবি, গণতন্ত্রের শত্রুদের আর জায়গা দেওয়া যাবে না।