প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ২০:২৫
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আগে ও পরে সংঘটিত হামলা, সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনায় এলাকা পরিণত হয় উত্তপ্ত রণক্ষেত্রে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বুধবার বিকেলে প্রথমে ১৪৪ ধারা ও পরে সন্ধ্যায় কারফিউ জারি করা হয়। গোপালগঞ্জবাসীর উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি বার্তায় স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জানান, পরিস্থিতি জীবন-মৃত্যুর মতো না হলে কেউ ঘর থেকে বের হবেন না এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। একই পোস্টে তিনি জানান, পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে সবকিছু মনিটরিং করছে এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও সেনা-পুলিশ প্রধানদের নির্দেশনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে।
এদিন বেলা পৌনে ২টার দিকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে এনসিপির সমাবেশস্থলে হামলা চালালে মঞ্চ এলাকা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। পুলিশ সদস্যরা আদালত ভবনে আশ্রয় নেন, এনসিপি নেতাকর্মীরাও মঞ্চ থেকে দৌড়ে সরে যান। এই সময় হামলাকারীরা চেয়ার ভাঙচুর করে ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। পরে পুলিশ ও এনসিপি নেতাকর্মীদের ধাওয়ায় হামলাকারীরা পিছু হটে এবং এনসিপির সমাবেশ শুরু হয়। তবে সমাবেশ শেষে ফের হামলা হলে গোপালগঞ্জ জুড়ে টান টান উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রশাসন বাধ্য হয়ে কারফিউ জারি করে।
ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এনসিপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা যে হামলা চালিয়েছে তা গভীর উদ্বেগজনক। প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, এই বর্বর হামলা মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল এবং এর দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। বিবৃতিতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপের প্রশংসা করা হয় এবং জনগণের মধ্যে যারা পদযাত্রা অব্যাহত রেখেছেন, তাদের সাহসিকতা ও অটল মনোভাবকে কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
এই সহিংসতার মধ্যেও এনসিপির কর্মসূচি দেশের অন্যান্য এলাকায়ও অব্যাহত রয়েছে। ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে গোপালগঞ্জে এদিনের পদযাত্রা ছিল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যেখানে হামলার ঘটনায় সারা দেশে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এনসিপির নেতারা হামলার ঘটনার বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।