পলাশের দাফন সম্পন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক
সাখাওয়াত জামিল সৈকত (অতিথি লেখক)
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২৬শে ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১২:৩২ অপরাহ্ন
পলাশের দাফন সম্পন্ন

ঢাকা থেকে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের ‘ময়ূরপঙ্খি’উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী নিহত মাহাদীর ওরফে মাজিদুল ওরফে পলাশ আহমেদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। নিহত হওয়ার পর তার বাবা মরদেহ গ্রহণ না করার কথা বললেও অবশেষ মরদেহ গ্রহণ করে দাফন সম্পন্ন করা করেছে তার বাবা পিয়ার জাহান সরদার। গতরাতে সোমবার রাত আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন নিহত পলাশের বাবা। শনাক্তের পর যাচাই বাছাই শেষে তিনি মরদেহ গ্রহণ করেন। মরদেহ নিয়ে রাতই নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। এর পরে দাফন করে সম্পন্ন করা হয়।

তিনি জানান, রোববার রাতে কমান্ডো অভিযান শেষে পুলিশ নিহতের মরদেহ গ্রহণ করে। এরপর মৃতদেহ সুরতহাল শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হসেপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। এসময় নিহতের কেউ চট্টগ্রামে না থাকায় মরদেহটি হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের হিমঘরে রাখা হয়েছিল। সোমবার রাত আড়াইটা দিকে নিহতের মরদেহ শনাক্ত করেন তারা বাবা পিয়ার জাহান সরদার। এর আগে পলাশেরমরদেহ গ্রহণ ও দাফন করতে আপত্তি জানান তার বাবা পিয়ার জাহান।এসময় পলাশের বাবা পি আর জাহান জানান, ৫ বছর ছেলের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক নেই। ওর উচ্ছৃঙ্খল জীবন নিয়ে এতটাই অতিষ্ঠ ছিলেন যে, একপর্যায়ে তিনি কামনা করেন, হয় ছেলে ভালো হোক, না হয় মারা যাক। বিমান ছিনতাই করতে গিয়ে পলাশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে বলে জানতে পেরেছেন তিনি।

ছেলের লাশ আনার ব্যাপারে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। সরকার লাশ দিতে চাইলে লাশ গ্রহণ করবেন। নতুবা লাশও আনতে যাবেন না তারা। পি আর জাহান (পলাশের বাবা) অনেক বছর বিদেশে ছিলেন। প্রথমে কুয়েত এবং পরে সৌদি আরবে প্রবাস জীবন কাটান তিনি। আর তার পাঠানো টাকা-পয়সা নিয়ে উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করে আসছিল পলাশ। এর মধ্যে নাচ-গান থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র শিল্পে পর্যন্ত জড়ায় সে। কয়েকটি শর্টফিল্মও তৈরি করে। একপর্যায়ে ঢাকায় থাকা শুরু করে। বাড়িতে তেমন যাওয়া-আসা ছিল না। মাঝে মধ্যে টাকার প্রয়োজন হলে বাড়ি আসত। পি আর জাহান সাত বছর আগে স্থায়ীভাবে দেশে চলে আসেন। পলাশ তার পাঠানো সব টাকা নষ্ট করেছে।

বাধ্য হয়ে এলাকায় একটি মুদি দোকান দিয়ে সংসার চালাচ্ছেন তিনি। পলাশরা চার ভাই-বোন। এর মধ্যে তিন জন বোন। মা রেনু আক্তার গৃহিণী। পি আর জাহান বলেন, ২০-২৫ দিন আগে বাড়িতে আসে পলাশ। সাধারণত বাড়িতে সে এত দিন থাকে না। এ সময়ের মধ্যে অনেকটা পাল্টে যায় সে। মসজিদে যাওয়া-আসা করে, এমনকি নামাজের জন্য আজানও দেয়। গত শুক্রবার বাসা থেকে বিদায় নেয়ার সময় তার মাকে বলে যায়, ভ্রমণ ভিসায় সে দুবাই যাচ্ছে। তবে দুবাই যাওয়ার বিষয়ে আমাকে কিছুই বলেনি।

ইনিউজ ৭১/এম.আর