প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ১১:৩৩
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া সহিংস সংঘর্ষের পর আওয়ামী লীগের এক সংঘবদ্ধ চক্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পুরনো ও ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কহীন ছবি ব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গোপালগঞ্জের সহিংসতা নিয়ে এই ধরনের মনগড়া প্রচারণার উদ্দেশ্য ছিল জনমত বিভ্রান্ত করা।
প্রেস উইংয়ের ফ্যাক্টচেক দল তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানান, ১৬ জুলাই নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের সময়ের মতো ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে, যেগুলো পুরোনো বা ভিন্ন ঘটনার। এসব ছবি সহিংসতার দৃশ্য হিসেবে মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করা হয়।
একটি ছবিতে দেখা যায়, স্থানীয়রা এক আহত কিশোরকে বহন করছে, যেখানে পেছনে আগুন জ্বলছে ও বিক্ষোভকারীরা উত্তেজিত। তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ছবিটি ১০ আগস্ট ২০২৪ সালে গোপালগঞ্জের ভিন্ন এক ঘটনার। একইভাবে, ২০২২ সালের নারায়ণগঞ্জে বিএনপি সমাবেশের ছবি এবং ২০২৩ সালের মার্চ মাসের অন্য ঘটনার ছবি প্রচার করা হয়েছে গোপালগঞ্জের সংঘর্ষ হিসেবে।
এছাড়া একটি শিশুর ছবি, যাকে লাঠি হাতে দেখানো হয়েছে এবং দাবি করা হয়েছে যে সে গোপালগঞ্জের সহিংসতায় অংশ নিয়েছে, সেটিও গাজীপুরের সফিপুর এলাকার একটি ভিডিও থেকে নেওয়া। এছাড়াও, এই শিশুর ছবির ডিজিটালি সম্পাদিত সংস্করণ অনলাইনে ছড়ানো হয়েছে বলে প্রেস উইং দাবি করেছে।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আওয়ামী লীগপন্থী এই মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে জনমত বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে এবং সেনাবাহিনীকে অবান্তরভাবে বেসামরিক মানুষের ওপর গুলি চালানোর মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হচ্ছে। তারা বলেছেন, বাস্তব ঘটনার বিপরীতে এসব প্রচারণা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ছবি ও তথ্য ছড়িয়ে টাইমলাইন ভরিয়ে দিচ্ছে।
গোপালগঞ্জে সংঘর্ষ শুরু হয়, যখন এনসিপির গাড়িবহরে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সমর্থকরা হামলা চালায়। এর পর এই সংঘর্ষ তীব্র হয়ে ওঠে এবং চারজন নিহতের ঘটনা ঘটে। সহিংসতায় পুলিশ গাড়ি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৬ জুলাই রাত ৮টা থেকে ১৭ জুলাই সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কঠোর কারফিউ জারি করা হয়।
বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো মিথ্যা তথ্য ও ছবি যাচাই করে সত্যিকারের ঘটনা তুলে ধরতে প্রেস উইং কাজ করছে এবং জনগণকে বিভ্রান্তি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। তারা বলেন, সঠিক তথ্য না ছাড়া কোন তথ্য গ্রহণ বা ছড়ানো উচিত নয় যাতে ভুল ধারণা সৃষ্টি না হয়।