প্রকাশ: ৬ জুলাই ২০২৫, ২২:৩০
ইসলামি বিশ্বের উন্নয়নে সহায়তা বাড়াতে ইসলামি এনজিওদের আরও সক্রিয়ভাবে সামাজিক ব্যবসায় উদ্যোগে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিভিন্ন মুসলিম দেশের ইসলামি এনজিও প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সামাজিক ব্যবসা হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচন ও স্বাস্থ্যসেবায় গরিবদের সহায়তার কার্যকর একটি উপায়, যা ধর্মীয় মূল্যবোধ ও মানবিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, নারীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা আমাদের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠী এই সেবাগুলো থেকে বঞ্চিত হয়। তাই আমরা সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানে কাজ করছি এবং এতে তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। তিনি বিশ্বাস করেন, তরুণদের এমন উদ্যোগে সম্পৃক্ত করা হলে তা মুসলিম বিশ্বের সামগ্রিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখতে পারবে।
বৈঠকে উপস্থিত ইসলামি এনজিও নেতারা জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অধ্যাপক ইউনূস পরিচালিত সামাজিক ব্যবসার বিভিন্ন কার্যক্রম তাদের নিজ নিজ দেশে অনুরূপ উদ্যোগ নিতে উৎসাহিত করেছে। এই মডেল অনুসরণ করে ইতোমধ্যে অনেক দেশেই স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে নানা প্রকল্প শুরু হয়েছে বলে জানান তারা।
এ সময় তুরস্কের ইসলামি বিশ্বের এনজিও ইউনিয়ন (ইউএনআইডব্লিউ) এর মহাসচিব আইয়ুপ আকবাল, টার্কিশ আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি মুহাম্মদ হুসেইন আক্তার, মালয়েশিয়ার পারসাতুয়ান ওয়াদাহ পেন্সারদাসান উম্মাহর প্রতিনিধি ফাওয়াজ বিন হাসবুল্লাহ, পাকিস্তানের আলখিদমাত ফাউন্ডেশনের সভাপতি মুহাম্মদ আবদুস শাকুর এবং ইন্দোনেশিয়ার ড. সালামুন বাসরি উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও বিআইআইটির সভাপতি অধ্যাপক মাহবুব আহমেদ, এসএডব্লিউএবির চেয়ারম্যান এস এম রাশেদুজ্জামান, ইউএনআইডব্লিউর কাউন্সিল সদস্য ও কৃষিবিদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আলী আফজাল এবং বিআইআইটির মহাপরিচালক ড. এম. আবদুল আজিজ।
প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইউনূসের সামাজিক ব্যবসার ধারণাটি মুসলিম বিশ্বে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করেছে। এতে সমাজের উপেক্ষিত জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর একটি টেকসই পথ উন্মোচিত হয়েছে।
বৈঠকে তারা এই কার্যক্রমকে আরও বিস্তৃত করার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সভা শেষে প্রতিনিধিরা ইউনূসের সঙ্গে যৌথভাবে ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন।
সামাজিক ব্যবসার এই ধারণাকে সামনে রেখে মুসলিম বিশ্বের ইসলামি এনজিওগুলো আরও দৃঢ়ভাবে দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও স্বাস্থ্য সমস্যা মোকাবেলায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সকলে।