প্রকাশ: ৯ মে ২০২৫, ১৬:৩৫
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও সাধারণ মানুষের একাংশ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে স্বৈরাচারী শাসন, দমন-পীড়ন ও সন্ত্রাসের অভিযোগ এনে এই দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে একাট্টা হয়েছে। জনগণের এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার কথা জানিয়েছে।
সরকার শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিটি আমলে নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে এবং দ্রুত একটি সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়। জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশের জনগণের দাবি ও সংবিধানিক দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ছাত্রলীগকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে নানা সময়ে সহিংসতা, খুন, গুমসহ বিভিন্ন অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে আসছিল, যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরেও ছিল।
এছাড়াও সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জড়িত অন্যান্য সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইনে সংশোধনী আনার উদ্যোগ নিচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হবে।
জনমনে যে ক্ষোভ বিরাজ করছে, তার অন্যতম কারণ হলো আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও হত্যাকাণ্ড মামলার আসামি আবদুল হামিদের বিদেশে পাড়ি দেওয়া। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
সরকার জানিয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে যারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর মাধ্যমে সরকার জনগণের আস্থার পুনরুদ্ধারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা হলে দেশের রাজনীতিতে একটি বড় পরিবর্তনের সূচনা হবে। তবে তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা যেন গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখা জরুরি।
বর্তমান উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সরকার সবাইকে সংযম ও ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছে। গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তুলতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।