আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, হেফাজতে ইসলামের নেতারা কিছুদিন আগে মামলার তালিকা দিয়ে গেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে করা রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলাগুলো প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিনি এ কথা জানিয়েছেন নিজের ফেসবুক পেজে বুধবার একটি স্ট্যাটাসে।
তিনি উল্লেখ করেন, ইসলামী নেতাদের ওপর পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে বিভিন্ন নির্যাতন ও হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। তাঁর ভাষায়, "ইসলাম বিদ্বেষী হাসিনা সরকারের আমলে আলেম-উলামাদের বহুরকম নির্যাতন ও হয়রানি করা হয়েছিল। এর একটা পদ্ধতি ছিল মিথ্যা মামলা প্রদান।"
ড. আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা এই মামলাগুলো এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং যেগুলো সত্যিকার অর্থে হয়রানিমূলক, সেগুলো আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রত্যাহার করার কাজ শুরু হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল ভূমিকা নিয়ে কাজ করারও আশ্বাস দেন।
তিনি আরও জানান, হেফাজতে ইসলামের নেতারা ব্লগার অভিজিৎ হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত শফিউর রহমান ফারাবীর বিষয়ে সাহায্যের অনুরোধ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, "ফারাবীর বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। আমরা অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে বলেছি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।"
ড. আসিফ নজরুল নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন, তিনি সব সময় মজলুমদের পক্ষে এবং আইনের দৃষ্টিতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই তাঁর লক্ষ্য। এজন্য তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন, যেন তিনি আরও বেশি করে নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারেন।
এদিকে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে অনেক ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সংগঠন, যারা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিলেন, আলেমদের হয়রানির উদ্দেশ্যে করা মামলাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত ও সমাপ্তির জন্য।
সামাজিক মাধ্যমে এই স্ট্যাটাসটি প্রকাশের পর থেকে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই এটি বর্তমান সরকারের ধর্মীয় সহিষ্ণুতার প্রতীক হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ এটিকে রাজনৈতিক সমঝোতার অংশ বলেও ব্যাখ্যা করছেন।
তবে সরকারিভাবে এই মামলাগুলোর কী পরিণতি হতে যাচ্ছে, তা সময়ই বলে দেবে। আইন উপদেষ্টার কথায় আপাতত স্পষ্ট, বিষয়টি এখন ন্যায়বিচারের আলোকে বিবেচিত হচ্ছে এবং দায়িত্বশীলভাবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।