প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৫, ১১:৬
সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গত দু’দিনে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে, যা তাপমাত্রার দাপট অনেকটাই কমিয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ ১০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর পাশাপাশি দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও যথাক্রমে আমবাগানে ৯২, পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ৭১, বান্দরবানে ৬৯, নরসিংদীতে ৬২, নোয়াখালীর হাতিয়ায় ৪৬, সিলেটে ৩৪ এবং ঢাকায় ২৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
আজ সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টায় ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে। এতে রাজধানীতে দিনের তাপমাত্রা দুই ডিগ্রি পর্যন্ত কমার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী পাঁচ দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। কোথাও কোথাও ভারি বর্ষণও হতে পারে, যা আগাম সতর্কতার জন্য জরুরি।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হকের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের ঝাড়খণ্ড ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে দুর্বল হয়ে মধ্যপ্রদেশ অঞ্চলে লঘুচাপের রূপ নিচ্ছে। এ লঘুচাপটি ভারতের রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণাঞ্চলে প্রবাহিত মৌসুমি বায়ুর অক্ষের সাথে সংযুক্ত রয়েছে।
এই অবস্থায় আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খুলনা ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ এলাকা এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, বরিশাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া সহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে খুলনা ও সিলেটের কিছু অংশে মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণের সম্ভাবনাও রয়েছে।
এই বৃষ্টিপাতের ফলে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমে যেতে পারে, যা গরমের প্রকোপ কিছুটা হ্রাস করবে। তবে বৃষ্টির কারণে চলাচলে কিছু অসুবিধা তৈরি হতে পারে বলে পরিবহন ও জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
বৃষ্টিপাত ও নিম্নচাপের কারণে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। আবহাওয়া বিভাগ স্থানীয় প্রশাসনকে নদী তীরবর্তী এলাকা এবং বন্যা প্রবণ এলাকায় বিশেষ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
আগামী কয়েকদিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার কারণে কৃষি কাজেও প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই সময় ফসল রক্ষা ও জমির সঠিক ব্যবস্থাপনার প্রতি কৃষকদের বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি সাধারণ মানুষকে গরম থেকে কিছুটা মুক্তি দেবে। তবে বৃষ্টির সঙ্গে বায়ুর গতিবেগ বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝড়-ঝঞ্ঝার সতর্কতাও জারি থাকতে পারে।
সরকারি ও বেসরকারি সংশ্লিষ্ট বিভাগের পক্ষ থেকে এই বৃষ্টিপাতের প্রভাব মোকাবেলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জনসাধারণকে আবহাওয়ার সর্বশেষ খবরের প্রতি খেয়াল রাখার পাশাপাশি নিজেদের ও পরিবারের নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।