দীর্ঘ ১৭ বছর পর ২৭তম বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত ১ হাজার ১৩৭ জনের চাকরি ফেরতের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই রায় দেন। আদালতের আদেশ অনুযায়ী, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে তাদের নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সালাউদ্দিন দোলন ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের মাধ্যমে নিয়োগবঞ্চিতরা ন্যায়বিচার পেলেন বলে মন্তব্য করেছেন আইনজীবীরা।
এর আগে বুধবার এই বিষয়ে শুনানি শেষ হয় এবং রায় ঘোষণার জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করা হয়। আদালত রায়ে বলেন, হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে ১১৩৭ জনকে নিয়োগ দিতে হবে। ২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত ২৭তম বিসিএসে প্রথম মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন ৩৫৬৭ জন, তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তা বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
পরবর্তী সময়ে ২০০৮ সালে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং তাতে ৩২২৯ জন উত্তীর্ণ হন। প্রথমবার উত্তীর্ণ ১১৩৭ জন বাদ পড়েন এবং তারা আইনি লড়াইয়ে যান। একপর্যায়ে হাইকোর্ট ২০০৮ সালে প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত বৈধ ঘোষণা করে, কিন্তু ২০০৯ সালে অন্য একটি বেঞ্চ দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা অবৈধ ঘোষণা করে।
এই দ্বৈত রায়ের ফলে নিয়োগবঞ্চিতরা আপিল করেন। আপিল বিভাগের ২০১০ সালের রায়ে দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা বৈধ বলা হয়। পরে নিয়োগবঞ্চিতদের পক্ষে ১৪০টি পৃথক আবেদন করা হয় এবং বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য আদালতে তোলা হয়।
আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দ্বিতীয় মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার কোনো আইনগত অধিকার ছিল না। এমনকি সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) আইনে দ্বিতীয়বার মৌখিক পরীক্ষার সুযোগ রাখা নেই। এসব যুক্তির ভিত্তিতে আপিল বিভাগ নিয়োগবঞ্চিতদের পক্ষে রায় দেন।
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রথম মৌখিক পরীক্ষার ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় এবং পুনরায় পরীক্ষা নিয়ে নতুন তালিকা প্রকাশ করে। এতে আগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ অনেক প্রার্থী বাদ পড়েন এবং তারা নিজেদের অধিকার ফিরে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হন।
চাকরি ফিরে পাওয়া এক আবেদনকারী বলেন, ১৭ বছর ধরে ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করেছি। আজ আদালতের রায়ে ন্যায়বিচার পেয়েছি। দ্রুত নিয়োগ কার্যকর হলে আমাদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।