পুঁটি মাছ কাটা নিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করে থানায় হাজির স্বামী !

ঘাতক বাছির উদ্দিন (৩৫) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার সাহাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে। নিহত মৌসুমী আক্তার (২৯) কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার নবীপুর গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে। তারা দীর্ঘদিন মুরাদনগর উপজেলার উত্তর ত্রিশ গ্রামের আলাল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

স্থানীয় সূত্র ও পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে বাছির উদ্দিন কোম্পানীগঞ্জ বাজার থেকে পুঁটি মাছ কিনে বাসায় ফেরেন। মাছ কাটাকাটি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তর্কবিতর্ক শুরু হয়। এক পর্যায়ে মৌসুমী মাছ ছুড়ে মারলে বাছির উত্তেজিত হয়ে গলায় চাপ দিয়ে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর নিজেই থানায় গিয়ে উপস্থিত হয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

ঘাতক বাছির উদ্দিন জানান, নয় বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে চার বছর বয়সী জমজ এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বাছির দাবি করেন, তাদের দাম্পত্য জীবনে মৌসুমী তাকে মানসিকভাবে যন্ত্রণা দিতেন। তবে হত্যার কোনও পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। তিনি বলেন, “মাছ ছুড়ে মারার পর মুহূর্তের রাগে আমি ওভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাই। বুঝতেই পারিনি আমার স্ত্রী মারা যাবে।”

বাড়ির মালিক আলাল মিয়া বলেন, “দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে তারা আমার বাসায় ভাড়া থাকে। কোনোদিন তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটির শব্দ শুনিনি। এমন একটা ঘটনা ঘটবে, ভাবতেও পারছি না।”

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান জানান, “বাছির উদ্দিন নিজে থানায় এসে জানায়, সে তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে। প্রথমে বিশ্বাস না হলেও ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘাতক স্বামী থানার হেফাজতে রয়েছে, মামলা প্রক্রিয়াধীন।”

এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পারিবারিক বিষয়ে এতটা ভয়াবহ পরিণতি কীভাবে হলো, তা নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। পাশাপাশি সন্তানদের ভবিষ্যত নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রতিবেশীরা।