দোহায় অনুষ্ঠিত ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনে’ বক্তৃতা দিতে গিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি টেকসই, সবুজ ও স্থিতিশীল পৃথিবী গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, এখনই সময় সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে আগামীর পৃথিবী রচনার।
মঙ্গলবার কাতারের রাজধানী দোহায় আয়োজিত এ সম্মেলনে ড. ইউনূস বলেন, একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ শুধু উত্তরাধিকার নয়, এটি তৈরি করতে হয় সম্মিলিতভাবে। এজন্য জ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের সমন্বয় প্রয়োজন, যাতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সমতার ভিত্তিতে সমাজ গড়ে ওঠে।
তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ বর্তমানে এমন একটি অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে যেখানে রাষ্ট্র ও জনগণের মধ্যে একটি নতুন সামাজিক চুক্তি গঠনের সুযোগ রয়েছে। এই চুক্তিতে বিশেষভাবে তরুণ সমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা দরকার বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
ড. ইউনূস বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ও মানবিক সংকটের কারণে বিশ্ব একাধিক হুমকির মুখে রয়েছে। এই বাস্তবতায় টেকসই উন্নয়নের পথ রচনায় দরকার আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং প্রান্তিক জনগণের ক্ষমতায়ন।
তিনি জানান, ঢাকা শহরের মানুষ গত ৯ বছরে মাত্র ৩১ দিন নির্মল বাতাস পেয়েছে, যা ভবিষ্যৎ পরিবেশ বিপর্যয়ের এক অশনিসংকেত। এই চিত্র বদলাতে হলে টেকসই নীতিমালা, দক্ষ শাসন কাঠামো এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি প্রয়োগ জরুরি।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একটি এমন পৃথিবী গড়তে হবে যেখানে কেউ এতটা দরিদ্র থাকবে না যে সে স্বপ্ন দেখতে পারবে না। আবার কোনো স্বপ্ন এত বড় হবে না যে তা বাস্তবায়ন করা যাবে না।
তিনি কাতার ফাউন্ডেশনের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এই সম্মেলনের মাধ্যমে তারা প্রমাণ করেছে, উদ্ভাবন, ঐতিহ্য এবং অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বিশ্ব চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা সম্ভব।
শেষে তিনি সামাজিক ব্যবসা, মাইক্রোফাইন্যান্স এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ভূমিকা নতুনভাবে বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এসবের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার নতুন দ্বার খুলবে। কাতারের আমন্ত্রণে অংশগ্রহণ করে ড. ইউনূস সম্মেলন আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।