রোহিঙ্গা সংকটে কার্যকর উদ্যোগ চায় বাংলাদেশ, শান্তিরক্ষায়ও নারীর অংশ বাড়ানোর আহ্বান

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সক্রিয় ভূমিকা চেয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জঁ-পিয়েরে ল্যাক্রোয়া সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এই আহ্বান জানান। এ সময় চলমান মিয়ানমার সংকট ও সীমান্তে গুলিবিনিময় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, সীমান্তে গোলাগুলি, নাফ নদীর আশপাশে সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকায় বিঘ্ন এবং রোহিঙ্গা সংকট দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টা মনে করিয়ে দেন, সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে প্রত্যাবাসনের আশাকে পুনরুজ্জীবিত করেছেন। তিনি প্রত্যাশা করেন, মিয়ানমার ও আন্তর্জাতিক মহলের গঠনমূলক ভূমিকা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করবে।

বৈঠকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে ১১টি শান্তিরক্ষা মিশনের মধ্যে ১০টিতে ৫ হাজার ৬৭৭ জন সদস্য প্রেরণ করেছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা রাখছে এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আরও নারী শান্তিরক্ষী অংশগ্রহণে তিনি উৎসাহিত করছেন। তিনি জাতিসংঘের পিসকিপিং ক্যাপাবিলিটি রেডিনেস সিস্টেমের র‍্যাপিড ডিপ্লয়মেন্ট লেভেলে পাঁচটি ইউনিট প্রদানের প্রতিশ্রুতিও পুনর্ব্যক্ত করেন।

জবাবে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি ল্যাক্রোয়া জানান, শান্তিরক্ষা মিশনে নারীদের ভূমিকা আরও বিস্তৃত করতে জাতিসংঘ অঙ্গীকারবদ্ধ এবং নারীদের কেবল নির্দিষ্ট কিছু ভূমিকায় সীমাবদ্ধ না রেখে নেতৃত্বেও দেখতে চায়।

বৈঠকে আরও জানানো হয়, আগামী ১৩-১৪ মে জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে বাংলাদেশ একটি প্রতিনিধিদল পাঠাবে, যার নেতৃত্ব দেবেন বিদেশ উপদেষ্টা।

মানবাধিকার রক্ষা, প্রশিক্ষণ ও জবাবদিহিতা জোরদারে জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী বলেও জানান ড. ইউনূস।