শমসেরনগর বিমানবন্দরটি চালুর অপেক্ষায় মৌলভীবাজারবাসি

বিমানবন্দরটি মৌলভীবাজার জেলা সদর থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং শমসেরনগর চা বাগানের ৬২২ একর জমির ওপর নির্মিত। রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৬ হাজার ফুট ও প্রস্থ ৭৫ ফুট। ১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ব্রিটিশরা জাপান, মালয়েশিয়া, বার্মা ও ইন্দোনেশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য ‘দিলজান্দ বন্দর’ নামে এটির নির্মাণ করেন। স্বাধীনতার পর এটি শমসেরনগর বিমানবন্দর নামে পরিচিত হয়।

১৯৬৮ সালে একটি দুর্ঘটনার পর বিমান ওঠানামা বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের প্রচেষ্টায় বেসরকারিভাবে কিছুদিনের জন্য ফ্লাইট চালু হলেও পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাবে তা টেকসই হয়নি।

বর্তমানে রানওয়ের কিছু অংশে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ট্রেনিং কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এছাড়া এখানে বিমানবাহিনীর রিক্রুটমেন্ট অফিস ও বিশাল কৃষি খামার গড়ে তোলা হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় অনেক অবকাঠামো ধ্বংসপ্রায়।

সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের বিভিন্ন পরিত্যক্ত বিমানবন্দর পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে শমসেরনগর বিমানবন্দরও রয়েছে। মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন জানান, “বিমানবন্দরটি চালুর লক্ষ্যে আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে একাধিকবার আবেদন করেছি। ঢাকা থেকে বিমানবাহিনীর একটি প্রতিনিধি দল সরেজমিনে পরিদর্শন করে গিয়েছে। আমরা আশাবাদী, খুব দ্রুতই এখানে পুনরায় ফ্লাইট চালু হবে।”

স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রবাসীরা বলছেন, তারা বহু বছর ধরে শুনে আসছেন বিমানবন্দরটি চালু হবে, তবে তা কেবল কাগজে-কলমেই ছিল। এবারের উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে মৌলভীবাজারবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে বলে তারা আশা করছেন।

এয়ারলাইন্স সংশ্লিষ্টরা জানান, এই রুটটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সরকার উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধা দিলে তারা প্রতিদিন ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এতে প্রবাসী, ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের যাতায়াত সহজ হবে। মৌলভীবাজার জেলার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান করছেন। ফলে বিমানবন্দর চালু হলে এটি হবে দেশের জন্য অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি সংযোজন।