প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২২:৫৭
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে দেশের ১৩টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানান।
জানা যায়, নেত্রকোণার শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় এবং নওগাঁর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয় রাখা হয়েছে। মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হয়েছে মেহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত হবে। একইভাবে শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামকরণ করা হয়েছে।
এছাড়া পিরোজপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং গোপালগঞ্জের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যথাক্রমে পিরোজপুর, নারায়ণগঞ্জ ও গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে পুনঃনামকরণ করা হয়েছে। চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এবং অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড আরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিতি পেয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড আরোস্পেস।
দেশের ৫৫টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৩টির নামই ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে। এর মধ্যে শেখ হাসিনার নামে দুটি, শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ৯টি এবং শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে দুটি বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত ছিল।
সরকারি উদ্যোগে এ ধরনের পরিবর্তন নিয়ে সমাজে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ একে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ এ পদক্ষেপের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট এলাকার শিক্ষার্থীরা নিজেদের এলাকাকে আরো বেশি গর্বের সঙ্গে উপস্থাপন করতে পারবেন। তবে এই পরিবর্তনটি যেন শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রভাব ফেলে, সে বিষয়ে সরকারকে মনোযোগ দিতে হবে।
অন্যদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে এ ধরনের নাম পরিবর্তনের ঘটনা দেশবাসীর মধ্যে বিভ্রান্তি ও অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। জনগণের উন্নয়ন ও শিক্ষাক্ষেত্রে ইতিবাচক ফলাফল আনাই এ ধরনের পরিবর্তনের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।
অন্তর্বর্তী সরকারের এমন সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের প্রভাব কতটা ইতিবাচক হবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ এবং দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে এটি কতটা কার্যকরী হবে, তা নিয়ে সবার নজর থাকবে।