প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৫, ১৯:২০
ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশে এক ধরনের ‘কারবালা’ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারের কারণে দেশের কোটি কোটি মানুষ ক্ষতির শিকার হয়েছে এবং এ ক্ষতির প্রতিকার না হলে আন্তর্জাতিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
শুক্রবার রাজশাহী কলেজে এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফরিদা আখতার এ মন্তব্য করেন। ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চের ৪৯তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি অংশ নেন। সেখানে দেশের পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও প্রতিবেশগত ক্ষতির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
তিনি বলেন, পদ্মা নদীর উজানে ভারতের নির্মিত ফারাক্কা বাঁধ বাংলাদেশের জন্য ধ্বংসযজ্ঞ বয়ে এনেছে। পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়ায় নদী শুকিয়ে যাচ্ছে, মাছ কমে যাচ্ছে এবং কৃষিজ উৎপাদন হুমকির মুখে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা এবং এ বিষয়ে জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাওয়া।
মাওলানা ভাসানীর ফারাক্কা লংমার্চ স্মরণ করে ফরিদা আখতার বলেন, ৯০ বছর বয়সে তিনি যে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, তা আজও আমাদের জন্য প্রাসঙ্গিক। আমরা ভারত সরকারের সঙ্গে চুক্তি নবায়নের পথে রয়েছি। তবে যদি সঠিকভাবে পানি না পাওয়া যায়, তাহলে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ছয় কোটিরও বেশি মানুষ ফারাক্কার কারণে সরাসরি কিংবা পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাছ, জলজ প্রাণী, কৃষি ও মানবজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফারাক্কা যেন এক প্রাকৃতিক শ্মশানে পরিণত করেছে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলকে, এমনকি পরিবেশগত দিক থেকেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।
উপদেষ্টা জানান, সরকারের অবস্থান এখন অনেক স্পষ্ট। পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের লক্ষ্যে চাপ সৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। ভারতের সঙ্গে যে চুক্তি রয়েছে, তার প্রতিটি ধারা কার্যকর করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।
ফরিদা আখতার বলেন, এই দেশকে বাঁচাতে হলে পানি চাই। আর এই পানির অধিকার আদায়ে সরকার ও জনগণকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ভবিষ্যতে এমন সংকট যেন না ঘটে, সেজন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়েও প্রস্তুতি নিতে হবে।