আশাশুনির হাটবাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ডিমওয়ালা মাছ

নিজস্ব প্রতিবেদক
সচ্চিদানন্দদেসদয়, আশাশুনি উপজেলা প্রতিনিধি, সাতক্ষিরা
প্রকাশিত: সোমবার ৮ই জুলাই ২০২৪ ০৮:০৫ অপরাহ্ন
আশাশুনির হাটবাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ডিমওয়ালা মাছ

আশাশুনির হাটবাজারে এখন দেদারসেবিক্রি হচ্ছে প্রাকৃতিক জলাশয়ের টেংরা,কৈ, শিং, মাগুর, পুঁটি,  চেলা,মলাসহ নানা প্রজাতির ডিমওয়ালা মাছ।ক্রেতাদেরও এসব মাছেরপ্রতি বিশেষআকর্ষণ থাকে। এসব মাছের দাম ও থাকে বেশি। অন্তত কেজিতে দু'শ থেকে তিনশ' টাকা বেশি।


উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে গিয়ে দেখাগেছে, মাছ বিক্রেতারা তাদের ডালিতে ডিমওয়ালা মাছ সাজিয়ে রেখেছেন।ক্রেতারাও দরদাম করছেন। একব্যবসায়ীর দোকানে দেখা গেছে লোভনীয় সাইজের টেংরা মাছ।সবগুলো মাছই জ্যন্ত। অন্তত ৮০ ভাগ মাছেরই পেট ভর্তি ডিম। অন্য সময়এসব টেংরা ৫শ' থেকে ৬শ' টাকাকেজি বিক্রি হয়। কিন্তু বিক্রেতা এসব ডিমওয়ালা টেংরার দাম চাচ্ছেন একহাজার টাকা কেজি। বর্ষারএ মাছগুলো নতুন পানির থেকে আনাহয়েছে বলে বিক্রেতা জানালেন।


এমনিতেই আশাশুনির জলাশয় দিন দিন কমে যাচ্ছে।প্রাকৃতিক জলাশয় দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে। রাস্তাঘাট হচ্ছে,মিঠা পানির আবাসন হচ্ছে।আবার যেসব প্রাকৃতিক একসময় ১২ মাস পানি জলবায়ু পরিবর্তন এবংথাকতো, এখন পলি পড়ার কারণে এরকম বহু জলাশয়ে বছরের একটি বড় সময় পানি না থাকার কারণে স্থানীয় জাতের বহু মাছের আবাসস্থল কমেছে, উৎপাদনওবহু মাছের প্রজাতি অস্তিত্ব হারিয়ে যেতে বসেছে।আবার বহু প্রজাতি ইতমধ্যবিলুপ্ত হয়ে গেছে।


এখন চাহিদা পূরণের জন্য প্রধানত নির্ভর করতে হচ্ছে কৃত্রিম  চাষাবাদের মাছের উপর। প্রাকৃতিক জলাশয়ের মাছের চেয়ে ফিশারিতে বা পুকুরে অবমুক্ত করে খাবার উপযোগী করা হচ্ছে। এসব মাছ আশাশুনির হাট বাজারে বিক্রি হচ্ছে ।ডিমওয়ালা টেংরা মাছ অনেক বেশি। প্রাকৃতিক জলাশয়ে প্রাকৃতিক নিয়মেই মাছের প্রজনন হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে মানুষের তেমন ভূমিকানেই, পরিশ্রমও নেই। কিন্তু কৃত্রিম চাষাবাদের ক্ষেত্রে হ্যাচারি স্থাপন করে মাতৃ মাছের ডিম বের করে পুরুষ মাছের সাহায্য নিয়ে যান্ত্রিক উপায়ে মাছের পোনা উৎপাদন করা হয়। সেগুলিও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে হয়ে থাকে। 


এক শ্রেণীর মধ্যবর্তী পোনা ব্যবসায়ী হ্যাচারি মালিকদের কাছ থেকে পোনা কিনে নিয়ে পুকুর মালিকদের কাছে বিক্রি করেথাকেন। তবে কৃত্রিমভাবে উৎপাদিত মাছের স্বাদ প্রাকৃতিক জলাশয়ের মাছের মত হয় না। এক সময় হ্যাচারিতে কেবল পাঙ্গাশ, তেলাপিয়া আর কার্প জাতীয় মাছের পোনা উৎপাদিত হতো।এখন পাবদা, শিং, মাগুর, কৈ, টেংরা,  টাকি, মেনিসহ  জাতের ছোট প্রজাতির মাছেরও পোনা উৎপাদিত হচ্ছে। হুমকিতে প্রোটিনের ওপর।বিভিন্ন প্রজাতির মাছ এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আবাদ হচ্ছে।


বাজারে এখন এসব চাষকরা মাছেরই দাপট চলছে।উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কে  ডিমওয়ালা মাছ শিকার ও বাজারে বিক্রির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের ব্যাপারে প্রশ্ন করলে জানান, সরকার ইলিশের ডিম পারার মৌসুমের মত মিঠা পানির প্রাকৃতিক জলাশয়ের ক্ষেত্রে ও ডিমওয়ালা মাছের মৌসুমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত।  


মৎস্য জীবীদের প্রণোদনা দিয়ে দেশীয় প্রজাতির মাছকে ফিরিয়ে আনতে হবে বলে মন্তব্য করেন পরিবেশ কর্মী অসিম দত্ত।এর ফলে প্রাকৃতিক জলাশয়ে মাছের প্রজনন অনেক বেড়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন।