কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরসহ পূর্বাঞ্চলে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বন্যায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন রোববার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে একটি সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য তুলে ধরেন।
ফাহমিদা খাতুন জানান, এই ক্ষতি বাংলাদেশের মোট জিডিপির দশমিক ২৬ শতাংশের সমান। বন্যার ফলে কৃষি ও বন খাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে, যার পরিমাণ ৫ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা। অবকাঠামো খাতে ৪ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে, এবং ঘরবাড়িতে ক্ষতি হয়েছে ২ হাজার ৪০৭ কোটি টাকার।
নোয়াখালী জেলা এই বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যেখানে ক্ষতির পরিমাণ ৪ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। এর পরেই কুমিল্লা জেলার ক্ষতির পরিমাণ ৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা। এভাবে পুরো দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, যা স্থানীয় জনগণের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছে।
এদিকে, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই ৪ অক্টোবর রাত থেকে শেরপুরে আবারও ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং টানা ভারি বৃষ্টির কারণে শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার ৬০টি ইউনিয়নের লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এ পরিস্থিতিতে সেখানে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে, যেখানে এপর্যন্ত ৫ জন নিহত হয়েছে।
স্থানীয় সরকার ও অন্যান্য সহায়ক সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে দ্রুততম সময়ে বন্যা-দুর্গতদের সাহায্য করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে, তবে পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ কমছে না। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের প্রস্তুতি ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া আরও জোরদার করা প্রয়োজন।
এছাড়া, ভবিষ্যতে এ ধরনের বিপর্যয়ের প্রভাব কমানোর জন্য বন্যা প্রতিরোধের কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য এবং পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি কৃষি ও অবকাঠামো পুনরুদ্ধারও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।