প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ২২:১
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
প্রসূতি নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের মতে, এটি নতুন কিছু নয়—আগেও এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে ডা. রইসুল ইসলাম রতনের ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে পুত্রসন্তান জন্ম দেন ২৭ বছর বয়সী শাহানা বেগম। কিন্তু সিজারের পর তার শারীরিক অবস্থা দ্রুত খারাপ হতে থাকে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, রাত ১০টার মধ্যেই তাকে তড়িঘড়ি করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহানার মৃত্যু ঘটে।
মৃত শাহানা রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের বেথুলিয়া মুন্সিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার স্বামী ওমর ফারুকের বাড়ি পাবনার ঢালারচরে। মঙ্গলবার রাতে প্রসব ব্যথা উঠলে প্রথমে তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সদর হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডে কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণের পর চিকিৎসকরা তাকে সিজারের পরামর্শ দেন এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো না থাকায় বাইরে ক্লিনিকে রেফার করেন।
পরে বুধবার সন্ধ্যার পর শাহানাকে নিয়ে যাওয়া হয় ডা. রতন ক্লিনিকে। সিজার পরিচালনা করেন ক্লিনিকের মালিক ডা. রইসুল ইসলাম রতন নিজেই। কিন্তু অস্ত্রোপচারের পরই শুরু হয় জটিলতা, যার ফলাফল ছিল প্রাণঘাতী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে পরিবারকে ৪ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে ক্লিনিকের পক্ষ থেকে। তবে পরিবার সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ডা. রতনকে পাওয়া যায়নি। ক্লিনিকের ম্যানেজার জানান, তিনি জানেন না ডাক্তার কোথায় আছেন, তবে শুনেছেন তিনি ঢাকায় গেছেন।
ডা. রতনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি কোনো কল রিসিভ করেননি। বিষয়টি নিয়ে রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. এস এম মাসুদ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এই ক্লিনিকে অতীতেও ভুল চিকিৎসার কারণে একাধিক মৃত্যু ঘটেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিবারই ঘটনাগুলো গোপনে মিমাংসা করে ধামাচাপা দেওয়া হয়, যা এখন চরম উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।