মধ্যনগরে ভারত থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে আনা ৪০টি গরু জব্দ এবং চার চোরাকারবারিকে আটক করেছে ট্রাস্কফোর্স। মধ্যরাতের গোপন অভিযানে এই গরুগুলো উদ্ধার করা হয়। মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জল রায়ের নেতৃত্বে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সহযোগিতায় এই অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে সুমেশ্বরী নদীর নৌপথে একটি ট্রলার বোঝাই করে পাচারকালে গরুগুলো জব্দ করা হয়। আটককৃতরা হলেন আমানীপুর গ্রামের মহর আলী, তেলীগাঁও গ্রামের আয়নাল হক, দুদ মিয়া এবং আবুল কালাম।
অভিযানের সময় চোরাকারবারিরা ভারত থেকে গরু এনে স্থানীয় বাজারে বিক্রির জন্য পাচার করছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টাস্কফোর্স পুরো অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করে। স্থানীয় সূত্র মতে, চোরাচালানের এই চক্র দীর্ঘদিন ধরে এই কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। জব্দকৃত গরুর মূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
মধ্যনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সজীব রহমান জানিয়েছেন, চার আটককৃত চোরাকারবারি ছাড়াও অজ্ঞাত আরও সাতজনের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এখন তাদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে। ইউএনও উজ্জল রায় বলেন, চোরাচালান রোধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে এবং এ ধরনের কার্যক্রম কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।
স্থানীয়দের মতে, সুনামগঞ্জের সীমান্ত এলাকাগুলো চোরাচালানের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। প্রশাসনের তৎপরতা সত্ত্বেও কিছু চোরাকারবারি সুযোগ খুঁজে পাচার চালানোর চেষ্টা করে। এ ধরনের অভিযান পরিচালনার ফলে চোরাচালান কিছুটা কমবে বলে ধারণা করছেন তারা।
গরু পাচারের ঘটনাটি শুধু আর্থিক ক্ষতির বিষয় নয়, বরং এটি দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপরেও প্রভাব ফেলে। স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি সীমান্তরক্ষী বাহিনী আরও কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করলে চোরাচালান বন্ধ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, চোরাচালান চক্রটি ভারত থেকে গরু এনে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করে থাকে। এই চক্রের সঙ্গে আরও অনেক ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে। প্রশাসন তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে।
প্রশাসন জানিয়েছে, জব্দকৃত গরুগুলো নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে এবং এর অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হবে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম চলছে এবং দ্রুততম সময়ে এর নিষ্পত্তি করা হবে।
এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকলে চোরাচালান রোধে বড় ধরনের সাফল্য আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। প্রশাসনের তৎপরতা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বিত প্রচেষ্টায় এই ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব বলে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জনগণ।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।