রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের দক্ষিণ তেনাপচায় অপরিকল্পিত খাল খননের কারনে খালপাড়ের কাঁচা-পাকা রাস্তা ও ঘরবাড়ি ধ্বসে যাচ্ছ বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে করে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধানে গতবছর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়ন দিয়ে বয়ে যাওয়া খালটি খনন করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু খননকালে খালের অনেক জায়গায় পর্যাপ্ত ঢাল রাখা হয়নি।এছাড়া ব্রীজসহ বিভিন্ন ঝুকিপূর্ণ স্থানে গার্ডার, সিসি ব্লক, জিও ব্যাগসহ প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজন থাকলেও সে সব করা হয়নি।এতে করে এ বছর বর্ষা মৌসুমে ওই খাল দিয়ে তীব্র স্রোত প্রবাহিত হয়ে খালের বহু স্থানে দুই পাড়ে ধ্বসের সৃষ্টি হয়।
সরেজমিন দেবগ্রাম ইউনিয়নের পশ্চিম তেনাপঁচা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, খালটি দিয়ে স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে সেখানে অনেকটা এলাকা জুড়ে ধ্বসে গেছে। গ্রামের লোকজনের চলাচল করা ও গোরস্তানে লাশ নিয়ে যাওয়ার একমাত্র কাঁচা রাস্তাটির (প্রায় ১২ ফুট) বেশিরভাগ অংশ ধ্বসে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। রাস্তা না থাকার কারনে লোকজন আশে পাশের বাড়ির উপর দিয়ে যাতায়াত করছে। খালের উপর দিয়ে যাওয়া আরসিসি ব্রীজের পাশ থেকে মাটি ধ্বসে যাওয়ায় ব্রীজের কার্পেটিংসহ অনেকটা অংশ দেবে গেছে। দেবে যাওয়া অংশে সাধারণ বালু বোঝাই বস্তা দিয়ে ভাঙন ঠেকাতে কাজ করছে। প্রতিনিয়ত ব্রীজের নিচে দিয়ে স্রোত যাওয়ার ফলে এ বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা তৈরি হয়েছে।
আলাপকালে ভুক্তভোগী ইসলাম সরদার বলেন,গত বছরও খালটি আমাদের ঘর থেকে নিরাপদ দূরত্ত্বে ছিল। ঘরের পাশ দিয়ে গ্রামের লোকজনের চলাচলের জন্য বেশ ১২ ফুট চওড়া একটা কাঁচা রাস্তা ছিল। কিন্তু গত বছর ঠিকমতো ঢাল না রেখে খাড়াখাড়ি খাল খনন করায় এবার তাদের অনেকের ঘরবাড়ি ও কাঁচা রাস্তা ধ্বসে যাচ্ছে।
এ সময় কথা হয় সালমা আক্তার নামের আরো এক ভুক্তভোগীর সাথে তিনি বলেন, ঠিক মত খাল খনন না করায় আমাদের ঘরের এক পাস খালে চলে গেছে যার কারনে আমরা আমাদের ঘর অন্য যায়গায় নিতে বাধ্য হয়েছি। অতি দ্রুত খাল পার না ঠিক করলে আমাদের এই ঘর সহ আশপাশের আরো অনেক ঘরবাড়ি খালে চলে যাবে।
এ বিষয়ে দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাফিজুল ইসলাম জানান, আমি ঘটনাস্থলে সরেজমিন দেখেছি। ভাঙ্গন ও ধ্বসে যাওয়া এলাকায় দ্রুত মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি ও কিছু বস্তা ফেলছি যাতে নতুন করে আর ভাঙন না সৃষ্টি না হয়।
ভাঙন প্রসঙ্গে রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী মোঃ ইকবাল সরদার জানান, খাল খনন সঠিক নিয়মেই করা হয়েছে। এ কাজে জিও ব্যাগ,সিসি ব্লক বা এমন কিছুর জন্য বরাদ্দ ছিল না। খালের পাড় ঘেষে রাস্তা তৈরি বা ঘরবাড়ি তৈরির বিষয়ে আমরা আগে থেকেই নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু কেউ কথা শোনে নাই। তবে খালের চওড়া অনুপাতে ব্রীজটি সঠিক মাপে না করে ছোট করে তৈরি করায় পশ্চিম তেনাপঁচা এলাকায় তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে সেখানে ভাঙ্গন ও ধ্বসের সৃষ্টি হচ্ছে। তারপরও জনস্বার্থে কি করা যায় আমরা দেখবো।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।