বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাসকে চিহ্নিত করার পাঁচ মাস গড়ালেও এখনও অধরা এই ব্যাধির কোনও ভ্যাকসিন এমনকি কার্যকর কোনও ওষুধও। এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বিভিন্ন দেশে যে লকডাউন চলছে সেটিও অনেকাংশে নির্ভর করছে ভ্যাকসিন তৈরির ওপর।
span style="font-size:medium;">এখন পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় দুই লাখ ৮৫ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন আবিষ্কারে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীদের অন্তত ১১০টি দল। সেই হিসাবে প্রতিটি দল একটি করে পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন আবিষ্কার করলে ১১০টি ভ্যাকসিন হবে।
তবে ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টায় এগিয়ে রয়েছে আটটি দলের বিজ্ঞানীরা। তাদের তৈরি ভ্যাকসিন মানবশরীরে পরীক্ষার জন্য অনুমতিও মিলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। এর মধ্যে প্রথম ধাপে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে চারটি ভ্যাকসিনের। আপাতত এই চার ভ্যাকসিনের সফলতার মধ্যে নির্ভর করছে প্রাণ সংহারক করোনার ভবিষ্যত।
এই চারটি ভ্যাকসিনের একটি হলো যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না ভ্যাকসিন- এমআরএনএ-১২৭৩। করোনাভাইরাসের আরএনএ ব্যবহার করে তৈরি ভ্যাকসিনটি যৌথভাবে উদ্ভাবন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এলার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ ও ম্যাসাচুসেটসের বায়োটেক কোম্পানি মডার্না। মানবদেহে প্রয়োগের পর দ্বিতীয় ধাপে প্রয়োগের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে এই ভ্যাকসিনের।
যুক্তরাজ্যের বিশ্বখ্যাত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের উদ্ভাবন করা আরেকটি ভ্যাকসিন- এনকোভ-১৯। তিন মাসের প্রচেষ্টা চালিয়ে তৈরি এই ভ্যাকসিন ইতোমধ্যে মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে। আগামী জুনে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফল এলেই দ্বিতীয় ধাপে তৈরি করা হবে ভ্যাকসিনটি।
সিনোভ্যাক বায়োটেক- পিকোভ্যাক নামের আকেটি ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করেছেন চীনের একদল বিজ্ঞানী। সম্প্রতি ভ্যাকসিনটি বানরের দেহে প্রয়োগ করে সফল হওয়ার দাবি করেছেন তারা।ভ্যাকসিনটি প্রয়োগের পর বানরগুলোকে করোনাভাইরাসের সংস্পর্শে নেওয়া হলেও তাদের ফুসফুসে ভাইরাসটির উপস্থিতি হ্রাস পেয়েছে বলে দাবি ওই বিজ্ঞানীদের। চীনের বায়োফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি সিনোভ্যাক বায়োটেকের তৈরি করা এই ভ্যাকসিন বানরের পর মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে।
করোনার আরএনএ থেকে তৈরি করা অন্য একটি ভ্যাকসিন হলো ভ্যাকসিন- বিএনটি১৬২। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফাইজার ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি এবং জার্মান কোম্পানি বায়োএনটেক এটি তৈরি করেছে। প্রথম দফা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন করে দ্বিতীয় দফায় ৩৬০ জন স্বেচ্ছাসেবীর দেহে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ওই বিজ্ঞানীদের দল।উল্লেখিত এই চারটি বাদে ইতালির রোমভিত্তিক একদল বিজ্ঞানী অন্য আরেকটি ভ্যাকসিন পরীক্ষা করেছেন বলে সিএনবিসি নিউজ জানিয়েছে। ইঁদুরের দেহে প্রয়োগ সাফল্যের পর গ্রীষ্ম মৌসুম শেষে ভ্যাকসিনটি মানুষের দেহে প্রয়োগ করার চিন্তা করছেন এই বিজ্ঞানীরা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।