প্রকাশ: ৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪৫
টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে দেশের তাপমাত্রা অনেকটাই কমে এসেছে। রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে একদিকে যেমন গরমের দাপট প্রশমিত হয়েছে, তেমনি কোথাও কোথাও জলাবদ্ধতার সমস্যাও দেখা দিয়েছে। সোমবার সন্ধ্যার মধ্যে সাত জেলায় ঝড়বৃষ্টির আশঙ্কার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সহকারী আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা জানান, সোমবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকায় বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক স্থানে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে। সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনাও রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ অবস্থায় দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমে যেতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। নীলফামারীর রাজারহাটে সর্বোচ্চ ১২৩ মিলিমিটার, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১২০, নীলফামারীর ডিমলায় ৮২, নওগাঁর বাদলগাছীতে ৬৭, নেত্রকোণায় ৬৫, কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৬১ এবং রংপুরে ৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যাত্রীভোগান্তি বেড়েছে এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি জমে কৃষিক্ষেত ও বসতবাড়িতে সমস্যা তৈরি করেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বর্ধিত পাঁচ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কিছুটা কমতে পারে। তবে আপাতত বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। আগামী কয়েকদিন দেশের অধিকাংশ স্থানে আকাশ মেঘলা থাকতে পারে এবং হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির ধারা বজায় থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। মৌসুমি প্রভাব কিছুটা দুর্বল না হওয়া পর্যন্ত বৃষ্টি পুরোপুরি থামার সম্ভাবনা নেই। তারা পরামর্শ দিয়েছেন, উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারীদের সতর্ক থাকতে এবং নদীপথে চলাচলকারীদের আবহাওয়া বার্তা অনুসরণ করতে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টানা বৃষ্টির এ ধারা দেশের কৃষিক্ষেতের জন্য একদিকে ইতিবাচক হলেও কিছু অঞ্চলে অতিবৃষ্টির কারণে ক্ষতির আশঙ্কাও রয়েছে। বিশেষত ধানের জমিতে অতিরিক্ত পানি জমে থাকলে ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ফলে বৃষ্টির মধ্যেও সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।