প্রকাশ: ৫ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩২
দীর্ঘ প্রায় দুই বছর ধরে চলমান গাজা আগ্রাসন বন্ধে অবশেষে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নতি স্বীকার করেছে ইসরায়েল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া ২০ দফা প্রস্তাবের কিছু অংশ মেনে নিয়ে গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসও। এ পরিস্থিতিতে ট্রাম্প ইসরায়েলকে অবিলম্বে বোমাবর্ষণ বন্ধের নির্দেশ দিলেও বাস্তবে নেতানিয়াহু বাহিনী এখনও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে।
আল জাজিরার তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকায় ৯৩টি বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এসব হামলায় অন্তত ৭০ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। ইসরায়েলের এ আক্রমণ যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়ার প্রতি এক বড় বাধা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা কমানোর দাবি করলেও ইসরায়েল বাস্তবে তার আগ্রাসন অব্যাহত রেখেছে। সংগঠনটি অভিযোগ করে যে, নেতানিয়াহুর সরকার যুদ্ধাপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং শান্তির নামে প্রতারণা করছে। হামাস আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও ইসলামি দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে—তারা যেন ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষা ও ত্রাণ কার্যক্রম জোরদারে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
গাজার গণমাধ্যম কার্যালয় জানিয়েছে, শনিবার ইসরায়েলি বিমান বাহিনী ৯৩টি হামলা চালায়, যাতে ৭০ জনের প্রাণহানি ঘটে। এর মধ্যে গাজা সিটিতেই ৪৭ জন নিহত হন। এসব হামলায় বহু ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে, ফলে মানবিক পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে।
এর আগে শুক্রবার ট্রাম্প প্রশাসন ইসরায়েলকে নির্দেশ দেয়, যেন অবিলম্বে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করা হয়। কারণ হামাস ইতোমধ্যে যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কিছু বন্দি মুক্তির প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, তিনি বিশ্বাস করেন যে হামাস এখন টেকসই শান্তির পথে এগোতে প্রস্তুত।
মিশর শনিবার ঘোষণা করেছে, আগামী সোমবার কায়রোতে ইসরায়েল ও হামাসের প্রতিনিধিদের মধ্যে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন ও বন্দি বিনিময় প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানানো হয়েছে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০ দফা গাজা শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ করেন। এতে যুদ্ধবিরতি, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং সংঘাত বন্ধের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্দি মুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ শর্ত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
গাজায় চলমান সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে, দুই দশকেরও বেশি সময় পর ফিলিস্তিন অঞ্চলে স্থায়ী শান্তির আশা জাগতে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। তবে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন শঙ্কা তৈরি করেছে।