প্রকাশ: ৯ অক্টোবর ২০২৫, ৯:৫৫
গাজায় চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাত বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ইসরায়েল ও হামাস রাজি হয়েছে। বুধবার (৮ অক্টোবর) নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প এ তথ্য প্রকাশ করেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা তার এই ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ট্রাম্প তার পোস্টে লিখেছেন, এই চুক্তির মানে হলো খুব শীঘ্রই সব জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েল তাদের সেনা গাজা থেকে প্রত্যাহার করবে। তিনি একে “শক্তিশালী, টেকসই ও স্থায়ী শান্তির পথে প্রথম পদক্ষেপ” বলে মন্তব্য করেন।
চুক্তি কার্যকর হলে এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে ট্রাম্প আগামী সপ্তাহান্তে মিসর সফরে যাবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি সম্ভবত শনিবার যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করে কায়রো পৌঁছাবেন। এ সফরকে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ বলে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে।
ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ট্রাম্পকে একটি চিরকুট দেন। ট্রাম্প সেটি পড়ে শোনান উপস্থিত সবাইকে। তিনি বলেন, “পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে জানিয়েছেন আমরা মধ্যপ্রাচ্যে এক ঐতিহাসিক চুক্তির খুব কাছাকাছি। এখনই আমাকে যেতে হবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানের জন্য।”
হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শুক্রবার সকালে ওয়াল্টার রিড মেডিকেল সেন্টারে বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করবেন। এরপরই তিনি মিসরের উদ্দেশে যাত্রা করতে পারেন। এই সফরে শান্তি পরিকল্পনার পরবর্তী ধাপ নিয়ে আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত মাসে ট্রাম্প গাজা সংকট নিরসনে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। ইসরায়েল ও হামাস উভয় পক্ষই প্রস্তাবটিকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার মিসরের পর্যটন নগরী শারম আল শেখে দুই পক্ষের আলোচনার সূচনা হয়, যা টানা তৃতীয় দিনের মতো বুধবারও চলে।
আলোচনায় অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ, ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার, কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি এবং তুরস্কের গোয়েন্দাপ্রধান ইব্রাহিম কালিন। এ বৈঠককে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিনের সংঘাত নিরসনের এক নতুন অধ্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েলে আকস্মিক হামলার পর থেকেই গাজায় শুরু হয় ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ। ওই হামলায় ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত দুই বছরে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে অন্তত ৬৭ হাজার ১৭৩ জন, যাদের মধ্যে প্রায় ২০ হাজার শিশু।