প্রকাশ: ৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১৭
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গুমের দুটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। এ পরোয়ানা বৃহস্পতিবার সকালে আইজিপি ও সংশ্লিষ্ট বাহিনীর ১২টি দপ্তরে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার কার্যালয়।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, বুধবার বিকেলেই দুই মামলায় ৩০ জন আসামির বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা পাঠানো হয়েছে। মামলাগুলো দেশের সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত মানবতাবিরোধী অপরাধ সংক্রান্ত তদন্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ অনুযায়ী যেসব দপ্তরে পরোয়ানা পাঠানো হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে চিফ অব আর্মি স্টাফ, চিফ অব জেনারেল স্টাফ, এডজুটেন্ট জেনারেল (আর্মি হেডকোয়ার্টার), ডিজি ডিজিএফআই, ডিজি এনএসআই, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (আর্মড ফোর্সেস ডিভিশন), সচিব প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, ডিরেক্টর মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স, ডিরেক্টর পার্সোনেল সার্ভিস ডিরেক্টরেট (বাংলাদেশ সেনাবাহিনী), কমান্ডেন্ট আর্মি সিকিউরিটি ইউনিট, প্রভোস্ট মার্শাল এবং সিইও (আর্মি এমপি ইউনিট ফর ইনফরমেশন)।
বুধবার বিকেলে ট্রাইব্যুনাল-১ টিএফআই সেলের গুমের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। একই দিন জেআইসি সংক্রান্ত আরেক মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। এ দুই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন।
প্রসিকিউশন সূত্র জানায়, দুটি মামলায়ই বাংলাদেশের সামরিক ও গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালকসহ সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংশোধিত আইনের অধীনে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর কোনো আসামি তাদের বর্তমান পদে থাকতে পারবেন না। তিনি জানান, আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার কার্যালয় জানিয়েছে, গ্রেফতারি পরোয়ানার কপি প্রাপ্তির পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আইজিপি কার্যালয় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের ইতিহাসে এটি একটি নজিরবিহীন পদক্ষেপ, যা ভবিষ্যতে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে আরও জোরদার করতে পারে।