প্রকাশ: ৯ অক্টোবর ২০২৫, ১০:১৩
ওমানের দুকুম সিদরা এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন চট্টগ্রামের আটজন বাংলাদেশি প্রবাসী। বুধবার (৮ অক্টোবর) স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে রাজধানী মাসকাট থেকে প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার দূরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় আরও একজন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ওমানে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) আসাদুল হক জানান, মাছ ধরার উদ্দেশ্যে ৯ বাংলাদেশি শ্রমিককে নিয়ে একটি মাইক্রোবাস দুকুম সিদরার দিকে যাচ্ছিল। পথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বড় ফিশিং কন্টেইনার ট্রাকের সঙ্গে মাইক্রোবাসটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ এতটাই ভয়াবহ ছিল যে ঘটনাস্থলেই আটজন বাংলাদেশি শ্রমিক মারা যান।
নিহতরা সবাই চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার বাসিন্দা। তাঁরা হলেন— সারকাইত ইউনিয়নের আলী আকবার সেরাংয়ের ছেলে মোহাম্মদ আমিন সওদাগর, শহীদ উল্লার ছেলে আরজু, ইব্রাহিম মিস্ত্রির ছেলে মোহাম্মদ রকি, মনু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ বাবলু, সিদ্দিক আহমেদের ছেলে সাহাব উদ্দিন, মাইটভাঙার জামাল উদ্দিনের ছেলে জুয়েল, রহমতপুরের মো. রনি এবং রাউজানের আলাউদ্দিন।
সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মংচিংনু মারমা জানান, নিহতদের মধ্যে সাতজনই সারিকাইত ইউনিয়নের তরুণ শ্রমিক। একই গ্রামের একাধিক পরিবারের সদস্য একসঙ্গে প্রাণ হারানোয় এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। তিনি বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সারিকাইত ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাছলিমা বেগম বলেন, “একই ইউনিয়নের পাঁচ তরুণ শ্রমিকের মৃত্যু আমাদের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। প্রতিটি পরিবারে এখন চলছে আহাজারি, পুরো এলাকাই নিস্তব্ধ।”
দুর্ঘটনার পরপরই ওমানে বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নিহতদের মরদেহ স্থানীয় হাসপাতালে রাখা হয়েছে। দূতাবাস জানিয়েছে, আইনি ও আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব মরদেহগুলো দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওমানের দুখুম পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত গতি ও দৃশ্যমানতার অভাবের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। পুলিশ উভয় গাড়ির চালকের বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করছে।
ওমানে প্রবাসী বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের মধ্যে এ দুর্ঘটনা গভীর শোকের সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ দূতাবাস নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে সকল প্রবাসী শ্রমিককে সড়ক নিরাপত্তা মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।